অবান্তরের সঙ্গে আমার বেশ অনেকদিনের আলাপ। তা প্রায় বছরচারেক আগে। তখনও অবান্তর এতটা জমজমাট হয়নি, ঐ বাচ্চাদের মতই টলে-টলে হাঁটত। আমার ব্লগ তার আশেপাশেই শুরু হয়েছিল, কিন্তু অবান্তর যেভাবে তর্তর্ করে হাঁটতে শুরু করল তাতে বেশ হকচকিয়ে গেলাম।
খাঁটি বাংলা ব্লগ বেশ বিরল (যদিও একদম নেই তা নয়)। যারা আছে তাদের মধ্যে অবান্তরের রমরমা বেশ ওপরের দিকেই। কিন্তু এই রিভিউ কুন্তলার ব্লগ নিয়ে নয় — ওর বই নিয়ে। হ্যাঁ, ওর বইয়ের নামও "অবান্তর" (বইয়ের নাম লিখলে বোধহয় উদ্ধৃতিচিহ্ন দিতে হয়)।
মিশরীয়রা এককালে পিরামিড-ফিরামিড বানাত না? "অবান্তর" হচ্ছে একদম ঐ জিনিস। একদম খাঁখাঁ মরুভূমি, কোত্থাও ট্রেন নেই, ট্রেন নেই, ট্রাক নেই, কিস্যু না, হঠাৎ করে কয়েকটা আখাম্বা পিরামিড, সামনে গিয়ে দাঁড়ালে মুখ আপনা থেকেই হাঁ হয়ে যাবে, তাও আবার কয়েক সহস্রাব্দ ধরে দাঁড়িয়ে!
কুন্তলার লেখা ঠিক সেইর'ম; কিস্যু নেই, একদম পাতি একটা রোজকার ঘটনা — কেন কেউ তাকে নিয়ে লিখতে যাবে? কিছু ফুল হয় না? এক্কেবারে এলেবেলে, নয়নতারাও নয়, একদম নাম-না-জানা ফুল, তার গন্ধটা খুব বাড়ির কথা মনে করায়? এই মেয়েটা সেইসব নিয়ে লেখে।
ঐ অজানা উটকো ফুল, যাকে নিয়ে লেখার কথা কারুর জীবনেও মাথায় আসবে না (প্রবৃত্তিও হবে না) সেইসব নিয়ে লেখার প্ল্যান করে ফেলল। হঠাৎ করে তর্তরিয়ে নদীটদি বইতে লাগল, আর ঐ ফুলের গন্ধটা একটা নামও পেয়ে গেল। আর ঐ যে, মুখ হাঁ হয়ে গেল, আর তারপর লেখাটা মনের ভেতর রয়েই গেল, রয়েই গেল, রয়েই গেল।
কুন্তলার আরেকটা মারকাটারি গুণ হল, ও নিজেকে নিয়ে হাসতে পারে। আর হাসি মানে খ্যাঁকখেঁকিয়ে হাসি না, কীর'ম একটা বাজে নাছোড়বান্দা হাসি যেখানে পড়তে পড়তে আপনার বত্রিশপাটি দাঁতও বেরোবে, আর হঠাৎ করে দেখবেন চোখটা কীর'ম জ্বালাজ্বালাও করছে। সে এক বিতিকিচ্ছিরি ব্যাপার। ছত্রিশ বছর বয়সে বই পড়তে পড়তে চোখ ছল্ছল্ করলে প্রেস্টিজ থাকে, বলুন?
ভাষাটার ভবিষ্যৎ তো বিশেষ সুবিধের মনে হচ্ছে না, এখন এই মেয়েটা যদি একটু ভেন্টিলেটর দেয়, এই আর কী। একটা আইকনের বড্ড দরকার।
বইটা এমনিই একটা দারুণ প্রাপ্তি, কিন্তু সঙ্গে ছিল রোহণ কুদ্দুসের দারুণ ছবি। প্রকাশক নিজে ছবিটবি আঁকতে শুরু করলে একটা মারাত্মক কম্বিনেশন হয়। সাধে "সৃষ্টিসুখ"এর এত জয়জয়কার?
***
অভিযোগ: আমার প্রিয় লেখার মধ্যে অনেকগুলো নেই, বিশেষতঃ "হ্যাদ্দেহোয়া" (এই ফাঁকে চট্ করে আবার পড়ে ফেললাম)।
***
বোনাস প্রাপ্তি: কুন্তলার সঙ্গে সাক্ষাৎকার। আমি ওকে অনেকদিন চিনি, তাই তুই-তোকারি করছি। ঋতুপর্ণ হওয়ার চেষ্টা করছি না।
অভিষেক: প্রথম কবে ভেবেছিলি যে বই বেরোবে?
কুন্তলা: বই বেরোবে, লাল রঙের চামড়াবাঁধাই হার্ডকভার, দাম করব নিরানব্বই টাকা নব্বই পয়সা — সেরকম তো কিছু ভাবিনি, ভেবেছিলাম গল্পগাছা লিখব। সেটা প্রথম ভেবেছিলাম ক্লাস থ্রি-তে। লিখব অথচ ছাপা হবে না, এমন ডিপ্রেসিং ওয়ার্ল্ডভিউ তখন ছিল না, কাজেই ধরে নেওয়া যেতে পারে ক্লাস থ্রি-তেই ভেবেছিলাম বই বেরোবে। আনন্দমেলায় একটা গল্প পড়ে লেখক হওয়ার আইডিয়াটা প্রথম মাথায় আসে। মাকে গিয়ে বলতে মা নিশ্চয়’বলে ঘাড় নেড়েছিলেন। মায়ের সম্মতি পেয়ে খুব ফুর্তি হয়েছিল মনে আছে। পরে অবশ্য বুঝেছি মায়ের ঘাড়নাড়ার ওপর ভরসা করা বিপজ্জনক। কারণ ক্লাস ফোরে বলেছিলাম পাইলট হব, তাতেও মা ঘাড় নেড়েছিলেন, ক্লাস ফাইভে দিদিমণি, তাতেও। খালি ক্লাস নাইনে উঠে যখন বললাম বাড়ির ছাদে মাশরুমচাষ করে দেশেবিদেশে রপ্তানি করব, মা একটু সন্দেহপ্রকাশ করেছিলেন। ব্যাপারটা লাভজনক হবে কি না সে বিষয়ে।
অভিষেক: ব্যাপারটা কীভাবে হল একটু গুছিয়ে বল্।
কুন্তলা: বই বেরোনোর ব্যাপারটা? সেরকম কিছুই হয়নি। আমি দিব্যি অবান্তর লিখছিলাম। এমন সময় হঠাৎ ই-মেলে রোহণ কুদ্দুস বলে একজনের দু-লাইনের একটা চিঠি এল। আমি "সৃষ্টিসুখ" বলে একটি প্রকাশনা সংস্থা চালাই, আপনার লেখা ছাপতে চাই। যেদিন মেলটা এল, সেদিন আবার আমার বিয়ে। আমি চিঠির উত্তর দিলাম হানিমুনটানিমুন সেরে এসে। রোহণ ভেবেছিল যে আমি ওর চিঠিটাকে ইয়ার্কি মনে করেছি, তাই উত্তর দিইনি। তারপর তো অনেক মেল-টেল চালাচালি হল, লেখা বাছাবাছি হল, প্রুফ দেখাদিখি হল, তারপর বই বেরিয়ে গেল।
অভিষেক: তোর বইয়ে কৃতজ্ঞতা স্বীকার-ফিকারের কোনও গল্প নেই। এখানে সারবি ব্যাপারটা?
কুন্তলা: সেকী, "উৎসর্গ" আছে তো। অবান্তরের পড়ুয়াদের। তাঁরা না পড়লে তো আমার ব্লগ লেখার ধৈর্য থাকত না, বইও বেরোত না। উৎসর্গ আর কৃতজ্ঞতা স্বীকার এক নয় বুঝি? আচ্ছা তাহলে স্বীকার করছি দাঁড়াও।
রোহণ কুদ্দুসের কাছে আমি কৃতজ্ঞ, আমার বই ছেপে বের করার জন্য।
অর্চিষ্মানের কাছে আমি কৃতজ্ঞ, লেখার সময় কানের কাছে গোলমাল না করার জন্য।
আর আমি সবথেকে বেশি কৃতজ্ঞ কুন্তলা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। জীবনে অন্তত একটা জিনিস লেগে থেকে করার জন্য।
অভিষেক: আমার প্রিয় লেখাগুলোর মধ্যে অনেকগুলোই নেই, তার মধ্যে সবথেকে মারাত্মক অমিশন ছিল "হ্যাদ্দেহোয়া"। তুই কীভাবে লেখা বেছেছিলি?
কুন্তলা: এই রে, আমার মায়েরও বইয়ের অনেক লেখা পছন্দ হয়নি। আমি তো আমার পছন্দমতোগুলোই বাছলাম মনে হল। যে লেখাগুলো পড়লে লোকের ভালো লাগতে পারে, সেই রকম লেখা খুঁজে খুঁজে বার করলাম। রোহণও কিছু বেছেছিল। "হ্যাদ্দেহোয়া" যে বাদ পড়ে গেছে, সেটা আমি নিজেই অনেকদিন পর্যন্ত খেয়াল করিনি। যখন খেয়াল হল ততক্ষণে হাতের তীর বেরিয়ে গেছে।
অভিষেক: বান্টি কি বাস্তব চরিত্র (এটা আরও অনেকের প্রশ্ন; আমি এমনও প্রশ্ন পেয়েছি বান্টিই অর্চিস্মান কিনা)?
কুন্তলা: বান্টি আর অর্চিষ্মানকে এক ও অবিকল ভাবলে বান্টিও পা ছড়িয়ে কাঁদতে বসবে, অর্চিষ্মানও। আকার ও প্রকারে এত ভিন্নরকম দুটো লোক আমি জীবনে আর দেখিনি। বান্টি বাস্তব। রক্তমাংসের বাস্তব। ছেলেটা যেমন ভালো, তেমনি মজার। ওর সঙ্গে কথাবার্তা চলার সময় কেউ যদি আধঘণ্টা না হেসে থাকতে পারে তাহলে সে প্রতিভা। তবে অনেকদিন বান্টির সঙ্গে আমার দেখা হয়নি।
অভিষেক: ছবিগুলো কিন্তু মারাত্মক হয়েছে। আইডিয়াটা তোর না রোহণের?
কুন্তলা: ছবির আইডিয়া ও এক্সিকিউশন, দুইই রোহণের। আমাকে আরও অনেকে ছবি ভালোলাগার কথা জানিয়েছেন।
অভিষেক: তুই কি আদৌ বুঝিস্ যে তোরা (যারা ভাল লিখিস্) যদি লেখাটা আরেকটু সিরিয়সলি নিস্, তাহলে মৃতপ্রায় ভাষাটা আবার ঘুরে দাঁড়াবে?
কুন্তলা: আমার ওপর তোমার এমত ভরসা দেখে আমি মুগ্ধ। ধন্যবাদ।
বাংলা ভাষা কি ভালো লেখার অভাবে মৃতপ্রায় হয়েছে? যদি ধরে নিই যে বাংলা মরতে শুরু করেছে গত কুড়ি, তিরিশ, পঞ্চাশ বছরে, তখন তো পুরোদমে লিখছেন সুনীল, শীর্ষেন্দু, লীলা, নবনীতা, মহাশ্বেতা। শংকরের প্রতিটি বই বেস্টসেলার হচ্ছে। সে সব বই থেকে আবার সিনেমাও হচ্ছে। বোদ্ধাদের পিঠচাপড়ানি পাচ্ছে, নির্বোধেরাও দেখছে শনিরবি টিভির সামনে বসে। অন্যান্য ভাষার সঙ্গে তুলনা করেও যদি দেখি, এই দেখ, জ্ঞানপীঠ আমাদের থেকে বেশি পেয়েছে মোটে কন্নড় আর হিন্দি, বাকি সবাইকে আমরা হারিয়েছি। ভালো লিখেছি বলেই না?
যদি ধরে নিই বাংলাভাষা মরতে বসেছে, তবে সেটা সাহিত্যের পাতায় নয়, আমাদের রোজকার জীবনে। আমরা আর বাংলায় কথা বলছি না, ছেলেমেয়েকে বাংলা শিখতে উৎসাহ দিচ্ছি না। টিভিতে বাংলায় স্বাস্থ্যকর পানীয়ের বিজ্ঞাপনে দু'বেলা অম্লানবদনে বসে বসে শুনছি, 'এতে আছে আধ কাপ দুধ যত পুষ্টি, আর এক কাপ বাদাম যত প্রোটিন'। সেসব বিজ্ঞাপনের বাচ্চা মডেলদের গলা কোন বাঙালি বাচ্চারা ডাব করে জানি না, তবে তারা যদি বাড়িতে বাবামায়ের সঙ্গেও ওই উচ্চারণে বাংলায় কথা বলে থাকে তবে তাতে সাহিত্যিকদের ষড়যন্ত্র কিছু আছে বলে তো মনে হয় না। সুনীল আর তেমন ভালো লিখতে পারছিলেন না বলে, বা মিতিনমাসি ব্যোমকেশের মতো জমছিল না বলে আমি আমার সন্তানকে সত্তর বছরের প্রতিষ্ঠিত সরকারি বাংলা স্কুলে না পাঠিয়ে, পাশের পাড়ার আগড়ুম-পয়েন্ট বা বাগড়ুম-সেন্টারে ভর্তি করে এসেছি, তেমন কি কেউ দাবি করছে? আসলে আমাদের কী করে যেন ধারণা হয়েছে যে ইংরিজিতে ইতিহাস ভূগোল জীবনবিজ্ঞান ভৌতবিজ্ঞান না পড়লে গোটা প্রজন্ম না খেয়ে মরবে। আমি আজ পর্যন্ত সে রকম দুর্ঘটনা ঘটতে দেখিনি বা শুনিনি অবশ্য, তবে আমি আর কতটাই বা দেখেছিশুনেছি।
বাংলা ভাষা থেকে একটা জে কে রোলিং বা সলমন রুশদি, নিদেনপক্ষে একটা চেতন ভগত-ও যদি বেরোয়, আমি অন্তত দেখতে পাচ্ছি না সেটা বাংলাভাষাকে বর্তমান পরিস্থিতিকে কীভাবে ঘুরে দাঁড়াতে সাহায্য করবে। বা হরলিক্সের বিজ্ঞাপনকে।
তবে সত্যি বলছি, আমি চিন্তিত নই। আমার চেনা অনেকেই আমাকে বললেন যে বাংলা শেখা, বাংলাকে ভালোবাসা, বাংলা স্কুলে যাওয়া না যাওয়ার ওপর নির্ভর করে না। পুরোটাই বাড়ির, বাবামায়ের কেরামতি। ইস্কুলে রাইমস পড়ছে পড়ুক না, হোমস্কুলিং বাংলায় হবে। সচেতন হয়ে তাঁরা সন্তানদের ভালো ভালো ক্ল্যাসিক সাহিত্য পড়াবেন। ভাষাটাকে ভালোবাসতে শেখাবেন। রবীন্দ্রনাথ, হুতোম প্যাঁচারও শুনেছি হোমস্কুলিং হয়েছিল। সে কথা মনে রাখলে আজকালকার বাচ্চারা বরং বেটার বাংলা শিখবে। কাজেই বাংলা ভাষার ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তার কিছু নেই, উল্টে উল্লাসেরই অবকাশ আছে।
তাছাড়াও আরেকটা কথা শুনি খুব, ভাষা নাকি নদীর মতো। চণ্ডীদাস বিদ্যাপতির বাংলা যেমন মরে গেছে, তোমারআমার বাংলাটাও মরে যাবে তেমন একদিন। তার জায়গায় অন্য কোনও বাংলা জন্ম নেবে, অন্য কোনও বাংলায় লোকে কথা বলবে, গান গাইবে, ছড়া লিখবে। সেটা আমাদের শুনতে ভালো লাগবে না হয়তো, তবে তাতে কিছু এসে যায় না।
অভিষেক: ফিকশন লেখার প্ল্যান আছে? ছোটগল্প, উপন্যাস, যা হোক্?
কুন্তলা: কপোলকল্পনাকে প্ল্যান বলা যায় কি? তাহলে আছে।
অভিষেক: প্রথম অটোগ্রাফ দেওয়ার অভিজ্ঞতাটা বল্।
কুন্তলা: এইটা একটা খুব হতাশাজনক ব্যাপার। প্রথম অটোগ্রাফ দিয়ে শিহরণটিহরণ কিছুই হয়নি। নিজের নাম সই করলাম, ব্যাংকের ফর্মের বদলে একটা বইয়ের পাতায়, ব্যস্। একটাই টেনশন হচ্ছিল, হাতের লেখাটা খারাপ হল নাকি।
অভিষেক: "অবান্তর ২" কবে বেরোবে?
কুন্তলা: কে জানে?
অ্যামাজন থেকে ছবি ঝাড়ার মজাই আলাদা! |
কুন্তলার লেখা ঠিক সেইর'ম; কিস্যু নেই, একদম পাতি একটা রোজকার ঘটনা — কেন কেউ তাকে নিয়ে লিখতে যাবে? কিছু ফুল হয় না? এক্কেবারে এলেবেলে, নয়নতারাও নয়, একদম নাম-না-জানা ফুল, তার গন্ধটা খুব বাড়ির কথা মনে করায়? এই মেয়েটা সেইসব নিয়ে লেখে।
ঐ অজানা উটকো ফুল, যাকে নিয়ে লেখার কথা কারুর জীবনেও মাথায় আসবে না (প্রবৃত্তিও হবে না) সেইসব নিয়ে লেখার প্ল্যান করে ফেলল। হঠাৎ করে তর্তরিয়ে নদীটদি বইতে লাগল, আর ঐ ফুলের গন্ধটা একটা নামও পেয়ে গেল। আর ঐ যে, মুখ হাঁ হয়ে গেল, আর তারপর লেখাটা মনের ভেতর রয়েই গেল, রয়েই গেল, রয়েই গেল।
কুন্তলার আরেকটা মারকাটারি গুণ হল, ও নিজেকে নিয়ে হাসতে পারে। আর হাসি মানে খ্যাঁকখেঁকিয়ে হাসি না, কীর'ম একটা বাজে নাছোড়বান্দা হাসি যেখানে পড়তে পড়তে আপনার বত্রিশপাটি দাঁতও বেরোবে, আর হঠাৎ করে দেখবেন চোখটা কীর'ম জ্বালাজ্বালাও করছে। সে এক বিতিকিচ্ছিরি ব্যাপার। ছত্রিশ বছর বয়সে বই পড়তে পড়তে চোখ ছল্ছল্ করলে প্রেস্টিজ থাকে, বলুন?
ভাষাটার ভবিষ্যৎ তো বিশেষ সুবিধের মনে হচ্ছে না, এখন এই মেয়েটা যদি একটু ভেন্টিলেটর দেয়, এই আর কী। একটা আইকনের বড্ড দরকার।
বইটা এমনিই একটা দারুণ প্রাপ্তি, কিন্তু সঙ্গে ছিল রোহণ কুদ্দুসের দারুণ ছবি। প্রকাশক নিজে ছবিটবি আঁকতে শুরু করলে একটা মারাত্মক কম্বিনেশন হয়। সাধে "সৃষ্টিসুখ"এর এত জয়জয়কার?
***
অভিযোগ: আমার প্রিয় লেখার মধ্যে অনেকগুলো নেই, বিশেষতঃ "হ্যাদ্দেহোয়া" (এই ফাঁকে চট্ করে আবার পড়ে ফেললাম)।
***
বোনাস প্রাপ্তি: কুন্তলার সঙ্গে সাক্ষাৎকার। আমি ওকে অনেকদিন চিনি, তাই তুই-তোকারি করছি। ঋতুপর্ণ হওয়ার চেষ্টা করছি না।
অভিষেক: প্রথম কবে ভেবেছিলি যে বই বেরোবে?
কুন্তলা: বই বেরোবে, লাল রঙের চামড়াবাঁধাই হার্ডকভার, দাম করব নিরানব্বই টাকা নব্বই পয়সা — সেরকম তো কিছু ভাবিনি, ভেবেছিলাম গল্পগাছা লিখব। সেটা প্রথম ভেবেছিলাম ক্লাস থ্রি-তে। লিখব অথচ ছাপা হবে না, এমন ডিপ্রেসিং ওয়ার্ল্ডভিউ তখন ছিল না, কাজেই ধরে নেওয়া যেতে পারে ক্লাস থ্রি-তেই ভেবেছিলাম বই বেরোবে। আনন্দমেলায় একটা গল্প পড়ে লেখক হওয়ার আইডিয়াটা প্রথম মাথায় আসে। মাকে গিয়ে বলতে মা নিশ্চয়’বলে ঘাড় নেড়েছিলেন। মায়ের সম্মতি পেয়ে খুব ফুর্তি হয়েছিল মনে আছে। পরে অবশ্য বুঝেছি মায়ের ঘাড়নাড়ার ওপর ভরসা করা বিপজ্জনক। কারণ ক্লাস ফোরে বলেছিলাম পাইলট হব, তাতেও মা ঘাড় নেড়েছিলেন, ক্লাস ফাইভে দিদিমণি, তাতেও। খালি ক্লাস নাইনে উঠে যখন বললাম বাড়ির ছাদে মাশরুমচাষ করে দেশেবিদেশে রপ্তানি করব, মা একটু সন্দেহপ্রকাশ করেছিলেন। ব্যাপারটা লাভজনক হবে কি না সে বিষয়ে।
অভিষেক: ব্যাপারটা কীভাবে হল একটু গুছিয়ে বল্।
কুন্তলা: বই বেরোনোর ব্যাপারটা? সেরকম কিছুই হয়নি। আমি দিব্যি অবান্তর লিখছিলাম। এমন সময় হঠাৎ ই-মেলে রোহণ কুদ্দুস বলে একজনের দু-লাইনের একটা চিঠি এল। আমি "সৃষ্টিসুখ" বলে একটি প্রকাশনা সংস্থা চালাই, আপনার লেখা ছাপতে চাই। যেদিন মেলটা এল, সেদিন আবার আমার বিয়ে। আমি চিঠির উত্তর দিলাম হানিমুনটানিমুন সেরে এসে। রোহণ ভেবেছিল যে আমি ওর চিঠিটাকে ইয়ার্কি মনে করেছি, তাই উত্তর দিইনি। তারপর তো অনেক মেল-টেল চালাচালি হল, লেখা বাছাবাছি হল, প্রুফ দেখাদিখি হল, তারপর বই বেরিয়ে গেল।
অভিষেক: তোর বইয়ে কৃতজ্ঞতা স্বীকার-ফিকারের কোনও গল্প নেই। এখানে সারবি ব্যাপারটা?
কুন্তলা: সেকী, "উৎসর্গ" আছে তো। অবান্তরের পড়ুয়াদের। তাঁরা না পড়লে তো আমার ব্লগ লেখার ধৈর্য থাকত না, বইও বেরোত না। উৎসর্গ আর কৃতজ্ঞতা স্বীকার এক নয় বুঝি? আচ্ছা তাহলে স্বীকার করছি দাঁড়াও।
রোহণ কুদ্দুসের কাছে আমি কৃতজ্ঞ, আমার বই ছেপে বের করার জন্য।
অর্চিষ্মানের কাছে আমি কৃতজ্ঞ, লেখার সময় কানের কাছে গোলমাল না করার জন্য।
আর আমি সবথেকে বেশি কৃতজ্ঞ কুন্তলা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। জীবনে অন্তত একটা জিনিস লেগে থেকে করার জন্য।
অভিষেক: আমার প্রিয় লেখাগুলোর মধ্যে অনেকগুলোই নেই, তার মধ্যে সবথেকে মারাত্মক অমিশন ছিল "হ্যাদ্দেহোয়া"। তুই কীভাবে লেখা বেছেছিলি?
কুন্তলা: এই রে, আমার মায়েরও বইয়ের অনেক লেখা পছন্দ হয়নি। আমি তো আমার পছন্দমতোগুলোই বাছলাম মনে হল। যে লেখাগুলো পড়লে লোকের ভালো লাগতে পারে, সেই রকম লেখা খুঁজে খুঁজে বার করলাম। রোহণও কিছু বেছেছিল। "হ্যাদ্দেহোয়া" যে বাদ পড়ে গেছে, সেটা আমি নিজেই অনেকদিন পর্যন্ত খেয়াল করিনি। যখন খেয়াল হল ততক্ষণে হাতের তীর বেরিয়ে গেছে।
অভিষেক: বান্টি কি বাস্তব চরিত্র (এটা আরও অনেকের প্রশ্ন; আমি এমনও প্রশ্ন পেয়েছি বান্টিই অর্চিস্মান কিনা)?
কুন্তলা: বান্টি আর অর্চিষ্মানকে এক ও অবিকল ভাবলে বান্টিও পা ছড়িয়ে কাঁদতে বসবে, অর্চিষ্মানও। আকার ও প্রকারে এত ভিন্নরকম দুটো লোক আমি জীবনে আর দেখিনি। বান্টি বাস্তব। রক্তমাংসের বাস্তব। ছেলেটা যেমন ভালো, তেমনি মজার। ওর সঙ্গে কথাবার্তা চলার সময় কেউ যদি আধঘণ্টা না হেসে থাকতে পারে তাহলে সে প্রতিভা। তবে অনেকদিন বান্টির সঙ্গে আমার দেখা হয়নি।
অভিষেক: ছবিগুলো কিন্তু মারাত্মক হয়েছে। আইডিয়াটা তোর না রোহণের?
কুন্তলা: ছবির আইডিয়া ও এক্সিকিউশন, দুইই রোহণের। আমাকে আরও অনেকে ছবি ভালোলাগার কথা জানিয়েছেন।
অভিষেক: তুই কি আদৌ বুঝিস্ যে তোরা (যারা ভাল লিখিস্) যদি লেখাটা আরেকটু সিরিয়সলি নিস্, তাহলে মৃতপ্রায় ভাষাটা আবার ঘুরে দাঁড়াবে?
কুন্তলা: আমার ওপর তোমার এমত ভরসা দেখে আমি মুগ্ধ। ধন্যবাদ।
বাংলা ভাষা কি ভালো লেখার অভাবে মৃতপ্রায় হয়েছে? যদি ধরে নিই যে বাংলা মরতে শুরু করেছে গত কুড়ি, তিরিশ, পঞ্চাশ বছরে, তখন তো পুরোদমে লিখছেন সুনীল, শীর্ষেন্দু, লীলা, নবনীতা, মহাশ্বেতা। শংকরের প্রতিটি বই বেস্টসেলার হচ্ছে। সে সব বই থেকে আবার সিনেমাও হচ্ছে। বোদ্ধাদের পিঠচাপড়ানি পাচ্ছে, নির্বোধেরাও দেখছে শনিরবি টিভির সামনে বসে। অন্যান্য ভাষার সঙ্গে তুলনা করেও যদি দেখি, এই দেখ, জ্ঞানপীঠ আমাদের থেকে বেশি পেয়েছে মোটে কন্নড় আর হিন্দি, বাকি সবাইকে আমরা হারিয়েছি। ভালো লিখেছি বলেই না?
যদি ধরে নিই বাংলাভাষা মরতে বসেছে, তবে সেটা সাহিত্যের পাতায় নয়, আমাদের রোজকার জীবনে। আমরা আর বাংলায় কথা বলছি না, ছেলেমেয়েকে বাংলা শিখতে উৎসাহ দিচ্ছি না। টিভিতে বাংলায় স্বাস্থ্যকর পানীয়ের বিজ্ঞাপনে দু'বেলা অম্লানবদনে বসে বসে শুনছি, 'এতে আছে আধ কাপ দুধ যত পুষ্টি, আর এক কাপ বাদাম যত প্রোটিন'। সেসব বিজ্ঞাপনের বাচ্চা মডেলদের গলা কোন বাঙালি বাচ্চারা ডাব করে জানি না, তবে তারা যদি বাড়িতে বাবামায়ের সঙ্গেও ওই উচ্চারণে বাংলায় কথা বলে থাকে তবে তাতে সাহিত্যিকদের ষড়যন্ত্র কিছু আছে বলে তো মনে হয় না। সুনীল আর তেমন ভালো লিখতে পারছিলেন না বলে, বা মিতিনমাসি ব্যোমকেশের মতো জমছিল না বলে আমি আমার সন্তানকে সত্তর বছরের প্রতিষ্ঠিত সরকারি বাংলা স্কুলে না পাঠিয়ে, পাশের পাড়ার আগড়ুম-পয়েন্ট বা বাগড়ুম-সেন্টারে ভর্তি করে এসেছি, তেমন কি কেউ দাবি করছে? আসলে আমাদের কী করে যেন ধারণা হয়েছে যে ইংরিজিতে ইতিহাস ভূগোল জীবনবিজ্ঞান ভৌতবিজ্ঞান না পড়লে গোটা প্রজন্ম না খেয়ে মরবে। আমি আজ পর্যন্ত সে রকম দুর্ঘটনা ঘটতে দেখিনি বা শুনিনি অবশ্য, তবে আমি আর কতটাই বা দেখেছিশুনেছি।
বাংলা ভাষা থেকে একটা জে কে রোলিং বা সলমন রুশদি, নিদেনপক্ষে একটা চেতন ভগত-ও যদি বেরোয়, আমি অন্তত দেখতে পাচ্ছি না সেটা বাংলাভাষাকে বর্তমান পরিস্থিতিকে কীভাবে ঘুরে দাঁড়াতে সাহায্য করবে। বা হরলিক্সের বিজ্ঞাপনকে।
তবে সত্যি বলছি, আমি চিন্তিত নই। আমার চেনা অনেকেই আমাকে বললেন যে বাংলা শেখা, বাংলাকে ভালোবাসা, বাংলা স্কুলে যাওয়া না যাওয়ার ওপর নির্ভর করে না। পুরোটাই বাড়ির, বাবামায়ের কেরামতি। ইস্কুলে রাইমস পড়ছে পড়ুক না, হোমস্কুলিং বাংলায় হবে। সচেতন হয়ে তাঁরা সন্তানদের ভালো ভালো ক্ল্যাসিক সাহিত্য পড়াবেন। ভাষাটাকে ভালোবাসতে শেখাবেন। রবীন্দ্রনাথ, হুতোম প্যাঁচারও শুনেছি হোমস্কুলিং হয়েছিল। সে কথা মনে রাখলে আজকালকার বাচ্চারা বরং বেটার বাংলা শিখবে। কাজেই বাংলা ভাষার ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তার কিছু নেই, উল্টে উল্লাসেরই অবকাশ আছে।
তাছাড়াও আরেকটা কথা শুনি খুব, ভাষা নাকি নদীর মতো। চণ্ডীদাস বিদ্যাপতির বাংলা যেমন মরে গেছে, তোমারআমার বাংলাটাও মরে যাবে তেমন একদিন। তার জায়গায় অন্য কোনও বাংলা জন্ম নেবে, অন্য কোনও বাংলায় লোকে কথা বলবে, গান গাইবে, ছড়া লিখবে। সেটা আমাদের শুনতে ভালো লাগবে না হয়তো, তবে তাতে কিছু এসে যায় না।
অভিষেক: ফিকশন লেখার প্ল্যান আছে? ছোটগল্প, উপন্যাস, যা হোক্?
কুন্তলা: কপোলকল্পনাকে প্ল্যান বলা যায় কি? তাহলে আছে।
অভিষেক: প্রথম অটোগ্রাফ দেওয়ার অভিজ্ঞতাটা বল্।
কুন্তলা: এইটা একটা খুব হতাশাজনক ব্যাপার। প্রথম অটোগ্রাফ দিয়ে শিহরণটিহরণ কিছুই হয়নি। নিজের নাম সই করলাম, ব্যাংকের ফর্মের বদলে একটা বইয়ের পাতায়, ব্যস্। একটাই টেনশন হচ্ছিল, হাতের লেখাটা খারাপ হল নাকি।
অভিষেক: "অবান্তর ২" কবে বেরোবে?
কুন্তলা: কে জানে?
অজস্র ধন্যবাদ। একই সঙ্গে কুন্তলা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক মুখুজ্জ্যেকে একত্র পোস্ট-এ পাওয়াটা পাঠক হিসেবে আমার কাছে হাতে স্বর্গ পাওয়ার মত। বইটা মানি কিনে রেখেছে, কিন্তু কলকাতা থেকে কেউ না এলে ঠিক হাতে পাওয়া যাচ্ছেনা। বাংলা সাহিত্য রসাতলে যাচ্ছে কিনা আমার সম্যক ধারণা নেই। কিন্তু কুন্তলা (এবং বাবু অভিষেক, তন্ময়, ইত্যাদি গুণী মানুষজন) রেগুলার লেখালেখি করলে সেই সম্ভাবনা বিরল হতে বাধ্য। আগেও বলেছি, আমার সব সময়ের ধারণা কুন্তলা নবনীতা দেবসেন-এর যোগ্য উত্তরসূরী হয়ে ওঠার ক্ষমতা রাখে।
ReplyDeleteআরো ধন্যবাদ তীর-এর বানানটা আ-আনন্দবাজারীয়ভাবে "তীর" লেখার জন্য। ওটা প্রাণে বড্ড বেদনা দেয়।
অনেক ধন্যবাদ কুন্তলাকে, ব্যস্ততার ফাঁকে সময় বের করার জন্য। আর "তির" আমরা লিখি না। ওটা ওরা লেখে।
Deleteপ্রশ্ন এবং উত্তর- দুই-ই পড়তে বেশ লাগল। সাংবাদিক-দের সাড়াজাগানো শিরোনাম-সন্ধানী প্রশ্ন আর প্রতিষ্ঠিত লেখক-দের অতি সাবধানী (অথবা যা আরও সাংঘাতিক, যেনতেনপ্রকারেণ প্রচার-কামী) উত্তরে ভরা সাক্ষাৎকার বছরের পর বছর দেখে-দেখে চড়া-পড়া চোখে এই লেখা পড়ে মনে আবারও আশা জাগছে যে আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের মধ্যেও হয়তো শত ব্যস্ততা'র মধ্যে বাংলায় কিছু পড়ে বুঝতে পারবার এবং আনন্দ পাওয়া'র উৎকৃষ্ট রসদ এখনও তৈরী হচ্ছে। এখন তাদের কাছ থেকে বুঝবার ভাষাটুকু কেড়ে না নিলেই হল।
ReplyDeleteকবি বলেছিলেন, "যে জীবন ফড়িং-এর, দোয়েল-এর, মানুষ-এর সাথে তার হয় নাকো দেখা"...কুন্তলা দি'র লেখা পড়লে বেশ মনে হয় এমন কিছু অভিজ্ঞতা'র কথা নতুন করে জানা হল, দেখা হল যা নিজেদের জীবনে কুন্তলা দি'র মতো করে দেখবার চোখটাই হারিয়ে ফেলেছি প্রায়! অনেক অনেক ধন্যবাদ কুন্তলা দি, 'অবান্তর'-এর জন্য (ব্লগ ও বই-দুই রূপেই)।
অভিষেক দা-কেও ধন্যবাদ, ভেবে-চিন্তে প্রশ্ন করবার জন্য। :P
এটাই প্রাপ্তি, শিরি। "বাংলায় কিছু পড়ে বুঝতে পারবার এবং আনন্দ পাওয়া'র উৎকৃষ্ট রসদ এখনও তৈরী হচ্ছে"।
Deleteকুন্তলারা বেঁচে থাক্।
Kuntolar lekha to khub i bhalo, kintu ei lekhatao besh ekta mastuto bhai level-er jugolbondi hoechhe. Shutorang, X-X-bhalo!
ReplyDelete"অবান্তর" পড়্, আর বাকিদের ঘাড় ধরে পড়তে বাধ্য কর্।
Deleteও: একদম ভুলে গেছিলাম...আরেকজন-কেও ধন্যবাদ দেওয়া উচিৎ, রোহণ কুদ্দুস! যিনি কী না প্রকাশনা এবং বইটি'র অলঙ্করণ-এর যৌথ দায়ভার সামলেছেন। ওনার আঁকায় 'মাছি' তিনগুণ উপভোগ্য হয়ে উঠেছে!
ReplyDeleteএকদম! রোহণ বেচারা একা হাতে লোকচক্ষুর আড়ালে থেকে চেষ্টা করছে লড়ে যাওয়ার। বড্ড কঠিন চ্যালেঞ্জ, কিন্তু খুঁজেপেতে ঠিক বের করছে। আর ছবি দেখে তো আমি বাক্রুদ্ধ!
Deleteতবে একটা মিনি-কৃতিত্ব প্রবীরেন্দ্ররও প্রাপ্য, রোহণ-কুন্তলার আলাপ করিয়ে দেওয়ার জন্য।
অফ লেট এটা আমাদের মিয়া বিবি দুজনেরই খুব পছন্দ হয়েছে। ব্লগ সংকলনে বইটির সঙ্গে আমারটিও যাচ্ছে জেনে ভালো লেগেছে। দিল্লী বইমেলার পরবর্তী সময়েও বইটির চাহিদা অমলিন। যেচে অর্ডার আসছে, তবে লেখিকা নিজেও একটু বই বিক্রি করার চেষ্টা করলে ভাল হত। শুনলাম ওনার পা ভেঙেছে। কামনা করি উনি সুস্থ হয়ে উঠুন দ্রুত।
ReplyDeleteওনার পা আস্ত এখন, উনি কী একটা অদ্ভুত জিনিস পরে ঘোরেন।
Delete:)
ReplyDelete:)-ই বটে।
DeleteBangali-ra commercialism pochhondo korena, jani. Kintu boi-ta kothai kena jabey, shetar ekta link diley money hoi kharap hotona.
ReplyDeleteঅ্যামাজনে দিব্যি পাওয়া যাচ্ছে।
Deletehttp://tinyurl.com/nf3g5p5
Ekta jhokjhoke tortaja sakkhatkar .....Kuntola....Boita porbo....Obantor ke Abhishek chenalo....dhonnobaad.
ReplyDeleteঅবশ্যই পড়বি!
Deleteহ্যাদ্দেহোয়া কে না দেখে আমিও বেশ হতাশ ।
ReplyDeleteআমরা অনেকেই হতাশ রে।
DeleteAbhishekda thank you
ReplyDeleteAwebaantor porbo ebar
Kuntala k aantorik dhonyobaad .... banglay lekhar jonye khanikta r tar cheye onek onekta beshi bangla bhashar byapare apnar dharonar kotha jene .... khub e optimistic (ami eibhabei kotha boli, bangla english mishiye, r apnake besh aapnaar jon mmone hochhe, tai nijer moto korei kotha bolchhi) ... r tar thekeo beshi, bhabna gulo pore monta khub bhore gaeche ... thik guchhiye likhte parchhina hoyto but khub khushi hoyechhi ... thank you
এসব আজেবাজে কথা ছেড়ে বইটা কেন্। বাংলা ভাষার উপকার কর্।
Deleteহক কথা, ভদ্রমহিলা বড়ই ভালো লেখেন। আপনিও খুবই ভালো লেখেন।
ReplyDeleteআমি আপনার তরফে ওঁকে জানিয়ে দেব।
DeleteAbhisheck, ajke apni amar ekti mohot upokar korlen. Ami goto du-tin mash dhor apnar o kuntala-debi blog porchi. Duto i amar besh bhalo lageche. Majhe majhe tukro takro montyobyo o korchi. Kintu "haddehoya" ta pora hoini. Ajke porlam link ta dakhe. Osadharon. Kono kotha hobe na.
ReplyDelete"হ্যাদ্দেহোয়া"টা কেন যে মেয়েটা রাখল না...
DeleteEi ekta kaajer moto kaj korli, Kuntala r interview niye. Darun hoyeche lekha ta. Shotti or aro onek onek lekha uchit. Ar tui seriously Banglae aro lekh. As I said, otai tor komol kanon.
ReplyDeleteআমার কথা ছাড়্, বাচ্চাটা কীর'ম লেখে সেটা বল্!
DeletePrashno o uttar dui - i khub bhalo laglo :) apnake dhanyabad kuntalar ato bhalo akta sakkhatkar neoar janyo ..:) - tinni
ReplyDeleteঅনেক, অনেক ধন্যবাদ, তিন্নি!
DeleteAbhishekDa, হ্যাদ্দেহোয়া-টা বাদ দেওয়ার একটাই কারণ। ওটাতে একটা রঙিন ছবি ছিল, সেটা আমাদের ঐ বাজেটে ছাপা যেত না। আর ছবি না দিলে লেখা বোধহয় অতটা ভালো লাগত না। আসলে লেখা বেছে নেওয়ার সময় এটা একটা বড় সমস্যা ছিল, ডিজিটাল মাধ্যমে প্রকাশের যে সুযোগ অবান্তর ব্লগে আছে, সেটা অবান্তর বইয়ে নেই। ব্যাপারটা, আমার মতে, হ্যারি পটার বই থেকে হ্যারি পটার মুভি করার মতো মনে হয়েছে। যাই হোক, অবান্তর বইটির জন্যে লেখিকা ছাড়াও আমায় যিনি সাহায্য করেছেন, তিনি PrabirendraDa। তিনি না থাকলে, আমি ব্লগটির কথা এত তাড়াতাড়ি জানতে পারতাম না।
ReplyDeleteএই আলোচনাটার জন্যে অনেক অনেক শুভেচ্ছা জেনো। কেউ নিজের পয়সায় বই কিনে সময় নিয়ে আলোচনাও করছেন। এমন অভিজ্ঞতা ও সৌভাগ্য খুব কম প্রকাশকেরই হয়ে থাকে। শেষে যে ইন্টারভিউটা দিয়েছ, সেটা একটা বড় প্রাপ্তি। কুন্তলাদির সঙ্গে বোধহয় একবারে পাঁচ মিনিটের বেশি কথা হয়নি। তাই সে ঠিক কী ভাবে, সেটা আমার জানা ছিল না।
আর শেষে আমার ছবিগুলো ভালো বলেছো বলে, একটা এ্যাত্তবড় থ্যাংকু। বিনয় না করেই বলি, আমার ছবিগুলো খুব দুর্বল মনে হয়েছে। কিন্তু যারা বইয়ে ছবি আঁকেন, তাঁরা এত টাকা চাইছিলেন যে, বাধ্য হয়ে নিজেই এঁকেছি।
না, তোর "হ্যাদ্দেহোয়া" বাদ দেওয়ার কারণটা যথাযথ। রঙিন ছবি বাদ দিলে সত্যিই ব্যাপারটা জমত না। আর ছবি নিয়ে আমি আর কী বলব? শুধু চাই, যুগ যুগ ধরে সবাই বেশি টাকা চাইতে থাকুক, আর তুই নিজে আঁকতে থাক্।
Delete"সে কথা মনে রাখলে আজকালকার বাচ্চারা বরং বেটার বাংলা শিখবে" better na bole "aro bhalo" bolle "aro bhalo" hoto na? Rojkar bangla kothopokothone (conversation jake boli amra Bangalira) evabe engreji sobdo misiye dewa ta bodh hoi thik noi- bises kore jokhn prosno tai chilo Bangla vasar vobissot niye.
ReplyDelete(Punoscho: Amar montobbo ta Banglai mudrito korle bodh hoi aro jordar hoto- kintu khanik alosso bosei kono Bangla "keyboard" ta lagano (install) hoini.)
আপনার কথা হয়ত যথাযথ, কিন্তু দেখলেন তো? এত চেষ্টা করেও "রোজকার" লিখলেন? "রোজ" কথাটা যদ্দূর জানি বাংলা নয়, ওটা ফারসী-জাতীয় কোনও ভাষা থেকে এসেছে। তাই বলছিলাম, কিছু বিদেশী শব্দ টুকটাক ঢুকে পড়ে। আসল হল লেখার স্টাইলে বাঙালিয়ানা, বাংলায় লেখার ইচ্ছে, আর লেখার মুন্সীয়ানা।
Deleteবঙ্গ ব্লগজগতের দুই দিকপালকে একসঙ্গে দেখে বেশ ভাল লাগল। :)
ReplyDeleteদারুণ অভিষেকদা। :)
কুন্তলাকেও আমার হয়ে ধন্যবাদ জানিয়ে দিও। :)
না। কুন্তলাকে সরাসরি ধন্যবাদ জানানোর উপায় আছে।
Deleteঅবান্তরে গিয়ে জানিয়ে দেব তাহলে । :)
Deleteএকদম।
Delete