অর্কদীপ্ত কহিল, “কেন, মহারাজ?”
মহারাজ প্রত্যুত্তরে যকৃৎ ও পাকস্থলীর
মধ্যবর্তী কোনও অঞ্চল হইতে “ঘুঃ” শব্দ উচ্চারণ করিলেন। অর্কদীপ্ত স্তম্ভিত হইয়া
গেল। এরূপ শব্দ সে কখনও শুনে নাই। বস্তুতঃ, রাজবংশে এইরূপ শব্দোচ্চারণের রীতি আছে
কিনা, তাহাও তাহার অবগত নহে।
মহারাজ পুনরায় পাদচারণায় রত হইলেন। অর্কদীপ্ত
ক্রমেই অধৈর্য হইয়া উঠিতেছিল। মহারাজকে একই প্রশ্ন বারংবার করিলে তিনি অবধারিত
বিরক্ত হইবেন; অন্যদিকে, দেবতারা কেন কুপিত, আর সে বিষয়ে তাহাকে কেন মহারাজ
গুপ্তমন্ত্রণায় আহ্বান করিয়াছেন, তাহাও উপলব্ধ হইতেছে না।
কোশলের মুখ্য সূপকার অর্কদীপ্ত। পলান্ন
ময়ূরসিদ্ধ মধুপর্ক তালক্ষীর দগ্ধ-আম্ররস মিষ্টান্ন পায়স সকলই তাহার নখদর্পণে। গত
বর্ষায় সরিষা পিষ্ট করিয়া মৎস্যে মাখাইয়া তাহাকে কদলীপত্রে আদ্যোপান্ত আবৃত করিয়া
নূতন যে পদ সে পাক করিয়াছিল, তাহার গুণগান রাজাপ্রজা সকলে করিয়া থাকে। তাহার
সহকারীগণ সকলেই তাহাকে গুরুজ্ঞান করে।
এহেন অর্কদীপ্ত রাজসকাশে আসিয়া বড়ই
অস্বস্তিবোধ করিতেছিল। মহারাজ যদি কিছুমাত্র কহিতেন তাহা হইলেও তাহার ন্যূনতম
জ্ঞানলাভ হইত। এক্ষেত্রে নির্বোধের ন্যায় দণ্ডায়মান থাকিয়াই তাহাকে একপ্রহরকাল
অতিবাহিত করিতে হইয়াছে।
মহারাজা অবশেষে কহিলেন, “জানো অর্ক, এ
জম্বুদ্বীপে কোশলের ন্যায় রাজ্য বিরল। কোশলের গগনচুম্বী যশ, মান, কৌলীন্য সকলের
কারণ ঐ একই – দেবকুলের আশীর্বাদ। দেবতারা আমাদের উপর প্রসন্ন চিরকাল প্রসন্ন
ছিলেন।”
“ছিলেন?”
“হাঁ। অদ্য প্রাতঃকালে আমার স্বপ্নে স্বয়ং
দেবরাজ ইন্দ্র আবির্ভূত হইয়াছিলেন।”
অর্কদীপ্ত ভাবিল, রাজকুলের সকলই তাহাদিগের হইতে
পৃথক। তাঁহাদের স্বপ্নেও দেবরাজই দেখা দেন। বৈদ্যের স্বপ্নে হয়ত অশ্বিনীকুমারদ্বয়
আবির্ভূত হন, কর্মকারের স্বপ্নে বিশ্বকর্মা, ইত্যাদি। দেবতাদের পাচক কে, তাহা
অর্কদীপ্ত ভাবিতে লাগিল।
“দেবরাজ কহিলেন, তিনি কোশলের প্রসাদে সন্তুষ্ট
নন।”
“সন্তুষ্ট নন?”
“না। তোমার পাক্প্রণালীতে তাঁহারা বিরক্ত।”
“কেন, মহারাজ?”
“তাঁহারা একই খাদ্যের পুনরাবৃত্তি চান না।”
“কিন্তু মহারাজ, কোশল তো চিরকাল দেবভোগে নব
খাদ্যতালিকা নির্মাণ করিয়া থাকে।”
“সে বিষয়ে আমি অবগত আছি। কিন্তু সমস্যা
অন্যত্র। দেবতারা আদ্যোপান্ত নূতন পদের সন্ধান করিতেছেন। যাহারা তাঁহাদিগকে নূতন
পদের সন্ধান দিবে, তাঁহারা সেই রাজ্যেই অধিষ্ঠান করিবেন।”
“মহারাজ, আপনি আমাকে আদেশ করুন, কদলীপত্রে
সরিষাপিষ্টলাঞ্ছিত মৎস্য ভক্ষণ করিলে দেবতারা কখনওই অন্য রাজ্যের কথা স্মরণে
আনিবেন না।”
“তুমি যথার্থ কহিয়াছ। তোমার আবিষ্কৃত মৎস্যের
পাক্প্রণালী সত্যই অভূতপূর্ব। কিন্তু তোমার সহকারী নন্দের কল্যাণে অবন্তীরাজকে
তোমার আবিষ্কৃত যাবতীয় পদের সহিত পরিচিত হইয়াছেন। মুগ্ধ অবন্তীবাসীগণ তাহাদিগের নূতন মুখ্য
সূপকারের গুণপণায় মুগ্ধ। সমস্যা হইল, তোমার যাবতীয় পদ সে দেবতাগণের ভোগে ইতিপূর্বে
ব্যবহার করিয়াছে। তাঁহারাও এখন অবন্তীর জয়গানে ব্যস্ত।”
“নন্দ, মহারাজ?” মূর্খশৃঙ্গারকের এরূপ স্পর্ধায়
অর্কদীপ্ত স্তম্ভিত হইল।
“এখন উপায়?”
“তুমিই আমাদের একমাত্র সহায়, অর্কদীপ্ত। যদি
কেহ কোশলকে দেবকুলের সুনজরে আনিতে পারে, সে কেবল তুমি। কল্য প্রভাতে যখন তাঁহারা
কোশলে আবির্ভূত হইবেন তাঁহাদিগের নিমিত্ত এহেন খাদ্য প্রস্তুত করিতে হইবে যাহাতে
তাঁহারা কখনও কোশল ত্যাগ না করেন। এরূপ খাদ্য যাহা কেহ ইতিপূর্বে আস্বাদন করে নাই,
ভবিষ্যতেও করিবে না।”
অর্কদীপ্ত পড়িল মহা ফাঁপরে। দাড়িম্বরস ও মরিচের
প্রয়োগে যে মৃগমাংসের ব্যঞ্জন অদ্য দ্বিপ্রহরে পাক করিবার বাসনা ছিল তাহার। মৃগমাংস
মহারানীর বড় প্রিয়।
***
রাজপ্রাসাদের প্রশস্ত উদ্যানে শুইয়া ছিল
অর্কদীপ্ত। কল্য প্রভাতে তাহার জীবনের বৃহত্তম পরীক্ষা। অদ্য সমগ্র দিবস সে নানান্
নূতন পরীক্ষায় নিযুক্ত ছিল, এবং নানান্ নূতন আবিষ্কারে কৃতকার্য হইয়াছে। ভর্জিত পার্শ্বমৎস্য
যে সর্ষপার স্পর্শে এরূপ সুস্বাদু হইতে পারে, তাহা কে জানিত?
চতুর্দশীর নির্মেঘ নক্ষত্রখচিত গগনে প্রায়-বর্তুলাকৃতি
চন্দ্রমা সগৌরবে বিরাজমান। নির্নিমেষ দৃষ্টিতে ঊর্ধ্বপানে চাহিয়া অর্কদীপ্তর তরুণ
হৃদয় অস্থির হইয়া উঠিল। অদ্য সে কৃতকার্য হইয়াছে কি? মহারাজ কহিয়াছেলেন, “এমন
খাদ্য যাহা কেহ ইতিপূর্বে আস্বাদন করে নাই, ভবিষ্যতেও করিবে না”। সত্য, সে আজ যাহা
পাক করিয়াছে তাহা কাহারও রসনাস্পর্শ করে নাই; কিন্তু ভবিষ্যৎ? ভবিষ্যতের
অনিশ্চয়তার গর্ভে কোন্ মহাপাচক কী প্রস্তুত করিবে তাহা কে কহিতে পারে?
না, তাহাকে অভিনব কিছু করিতে হইবে, যাহাতে
তাহার নাম মানবসভ্যতার ইতিহাসে অবিনশ্বর হইয়া থাকে। ব্যর্থ শিল্পীকে কেহ মনে রাখে
না; মৃত্যুর পর নিজ পদচিহ্ন রাখিয়া যাইতে কে না চাহে?
কিন্তু কীরূপ হইবে সেই অত্যাশ্চর্য অমৃত, যাহার
স্বাদ পরবর্তী যাবতীয় প্রজন্ম মনে রাখিবে?
বসন্তের মৃদুমন্দ সমীরণ অর্কদীপ্তকে শান্ত
করিতে অসমর্থ হইল। চঞ্চল মশককুলের দংশনও অগ্রাহ্য করিয়া সে স্থিরদৃষ্টিতে তাকাইয়া রহিল। তাহার
মৃত্যু হইবে একদিন, কিন্তু এই মহাকাশ, এই সূর্য-চন্দ্র-গ্রহ-নক্ষত্রের বিনাশ নাই। তাহার
নামও কালের অনন্ত স্রোতে গ্রথিত রাখিয়া যাইতে হইবে।
এক প্রহরকাল অতিবাহিত হইল। তাহার পর অর্কদীপ্তর
চক্ষু নিমীলিত হইল, ওষ্ঠে মৃদু হাসি দেখা দিল।
হাঁ, সে পারিবে।
***
পূর্ণিমার রাত্রি। কোশল আলোকিত করিয়া সূর্যদেব
আসিয়াছেন; উচ্চৈঃশ্রবাপৃষ্ঠে আসিয়াছেন স্বয়ং দেবরাজ ইন্দ্র; অরণিস্তুপ হইতে আবির্ভূত
হইলেন অগ্নিদেব; সরোবরমধ্যে দণ্ডায়মান বরুণদেব; বিশ্বকর্মা ভ্রূকুটি কুঞ্চিত করিয়া
প্রাসাদ পর্যবেক্ষণ করিতেছেন; অশ্বিনীকুমারদ্বয় অনিচ্ছুক নাগরিকবৃন্দের মণিবন্ধ
পরীক্ষা করিতেছেন; পবনদেবের জন্য ঋক্ষচর্মাবৃত বিশেষ প্রকোষ্ঠ নির্মিত হইয়াছে।
পূর্ণমাসীর রাত্রে চন্দ্রদেবের উপস্থিতির
সম্ভাবনা ক্ষীণ ছিল; উন্মুক্ত গবাক্ষপথে তিনি দৃষ্টিপাত করিতেছেন, কিন্তু পঞ্চেন্দ্রিয়র
কোনওটির সাহায্যেই তিনি অর্কদীপ্তর সুখাদ্যের আস্বাদ পাইতেছেন না।
মধুপর্কের পর অর্কদীপ্ত একে একে তাহার নূতন
খাদ্য উপস্থিত করিল। দুগ্ধফেননিভ সুগন্ধ অন্ন, বার্তাকু সহযোগে ইল্লীশমৎস্যের তরলপ্রায়
ব্যঞ্জন, শূকরস্নেহভর্জিত মরালবক্ষপিণ্ড, সুস্বাদু নক্রপক্ষসূপ, সুসিদ্ধ মূষিকজিহ্বা
ইত্যাদি নানাবিধ ভুজ্যবস্তুর সুবাসে ভোজনকক্ষ মোহিত। দেবতাগণ কোশলরাজের উপর তৃপ্ত
হইলেন।
তখন অর্কদীপ্ত ঘোষণা করিলেন, “অতঃপর যে সুখাদ্য
আমি আপনাদিগের স্বর্ণথালিকায় রাখিব, তাহা সমগ্র মানবকুলের ইতিহাসে অভূতপূর্ব। আপনারা
ত্রিকালদর্শী। ইহা ভক্ষণ করিয়া অধমকে অবগত করিবেন, ভবিষ্যতে ইহার সমকক্ষ কোনওরূপ
খাদ্য মানবজাতি পাক করিতে সক্ষম হইবে কী?”
ক্ষুদ্রপাত্রে ছাগমাংসের ব্যঞ্জন পরিবেশনান্তে অর্কদীপ্ত
তাহার নবাবিষ্কৃত আবিষ্কার বৃহদ্পাত্রে লইয়া উপনীত হইল। গব্যঘৃতের সুগন্ধে
ভোজনকক্ষ ভরিয়া উঠিল। কোশলরাজ স্বয়ং অধৈর্য হইয়া উঠিলেন।
দেবতাগণ তাহাদের দক্ষিণহস্তের সাহায্যে স্বাদগ্রহণ
করিলেন। তারপর তাহাদের সমবেত হর্ষধ্বনিতে কোশল হাসিয়া উঠিল। উপস্থিত সকলকে
স্তম্ভিত করিয়া দেবরাজ নিজ আসন ত্যাগ করিয়া অর্কদীপ্তকে আলিঙ্গন করিলেন; কোশলরাজের
গর্বিত অভিব্যক্তি অবলোকন করিয়া সভাসদ্গণ নিশ্চিন্ত হইল।
“তিষ্ঠ।”
কোশলের সুবিশাল ভোজনকক্ষে গণপতির কম্বুকণ্ঠ সহসা
মন্দ্রিত হইল।
“আমি কোনওরূপ অপরাধ করিয়াছি, প্রভু?” কোশলরাজের
অসহায় কণ্ঠে উপস্থিত সভাসদ্গণ প্রমাদ গণিল।
“দেখিতেছি এই খাদ্য আস্বাদন করিয়া ইহারা অতিশয়
তৃপ্ত। সূপকার, তোমার ক্ষুদ্র মস্তিষ্কে ইহা প্রবেশ করে নাই, যে এই খাদ্যের স্বাদগ্রহণ
আমার অসাধ্য? আমার এক হস্তে ক্ষুদ্র পরশু, দ্বিতীয় হস্তে পাশ, ও অপর দুই হস্ত
নিম্নগামী। শুণ্ড ভিন্ন আমি স্বাদগ্রহণ করিতে অকৃতকার্য। অবশিষ্ট যাহা খাদ্য ছিল
তাহা ভক্ষণ করাও অত্যন্ত কষ্টসাধ্য, কিন্তু তোমার আবিষ্কৃত এই নূতন পদ যারপরনাই
শুষ্ক। অতিথির অযোগ্য খাদ্য পরিবেশন অনুচিত, তাহা তোমার ক্ষুদ্র মস্তিষ্কে প্রবেশ
করে নাই? আমি তোমাকে অভিশাপ দিতেছি যে...”
“... বিনায়ক, আপনার কথা যথার্থ,” ইন্দ্র গণপতির
অভিশাপ বিঘ্নিত করিলেন। “কিন্তু আপনি অনুগ্রহ করিয়া ইহাকে ক্ষমা করিবেন। এই খাদ্য মানবসমাজের ইতিহাসে অমর হইয়া থাকিবে।
আপনি এই শিল্পীকে দণ্ডদান করিলে সমগ্র মানবজাতি এই অমৃতের স্বাদ হইতে বঞ্চিত
হইবে।”
“ইহা ভক্ষণ করা আপনার অনুচিত হইত,” অশ্বিনীকুমারদিগের
একজন (অপরজন লোলুপ দৃষ্টিতে স্বর্ণথালিকা পর্যবেক্ষণ করিতেছিলেন) কহিলেন। “আপনার
উদরের যা পরিমাপ, তাহাতে স্নেহজাতীয় খাদ্য আপনার অবিলম্বে পরিত্যাগ করা উচিত। মধুমেহ
অত্যন্ত ভয়াবহ ব্যাধি।”
কিন্তু গণপতি অনমনীয়। “আমার মুখনিঃসৃত বাক্য কদাপি ব্যর্থ হয় না।
অভিশাপ অনিবার্য। আপনাদের অনুরোধে আমি অভিশাপের মাত্রা হ্রাস করিতেছি। এই খাদ্যের
মান যতই উন্নত হউক, ইহার স্মৃতি সকলের অগোচর রহিবে। আর এই অর্বাচীনের নাম ইহার সহিত
যুক্ত রহিবে না।”
ইন্দ্রদেব কহিলেন, “গণপতির অভিশাপ খণ্ডন আমার
সাধ্যাতীত। এই খাদ্যের কথা
মানবজাতি যথার্থ বিস্মৃত হইবে, কিন্তু দুই সহস্রাব্দকাল অতীত হইলে পুনরায় ইহার
প্রত্যাবর্তন ঘটিবে।”
অর্কদীপ্তের অক্ষদ্বয় অশ্রুপূর্ণ করিয়া উঠিল,
কিন্তু ক্রমশঃ তাহার হনু দৃঢ়ভাব ধারণ করিল, মুষ্টি ইস্পাতকঠিন হইয়া উঠিল। তাহার
নাম অমর না হউক, তাহার আবিষ্কার তো মানবজাতির ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে রচিত হইবে!
দেবরাজের কণ্ঠস্বর পুনরায় মন্দ্রিত হইল: “অর্কদীপ্ত, আমি আশীর্বাদ করিতেছি, তোমার এই আবিষ্কার নবগৌরবে
আসীন হইবে। ইহা পুনরায় শ্রেষ্ঠ খাদ্যরূপে পরিচিত হইবে। কোশল ব্যতিরেকে অন্য
স্থানেও ইহার পুনরাবির্ভাব ঘটিতে পারে, কিন্তু তাহা জম্বুদ্বীপেই ঘটিবে। ঘৃত
মহার্ঘ হইলে কোনওরূপ বীজনিঃসৃত স্নেহজাতীয় পদার্থ দ্বারা ইহা পাক হইবে, কিন্তু
তাহাতেও ইহার স্বাদ অক্ষুণ্ণ থাকিবে। গণপতি ব্যতীত আমরা সকলে তোমাকে আশীর্বাদ করিতেছি।
তুমি আর কিছু কহিতে চাহ?”
খানিক ইতস্ততঃ করিয়া অর্কদীপ্ত কহিল, “দেবরাজ, চন্দ্রদেব
যে আমার রন্ধন স্বাদগ্রহণ করিতে অক্ষম হন, ইহাতে আমার বিবেকদংশনের অবধি থাকে না। আমি
প্রার্থনা করি, এই খাদ্য যতকাল প্রশংসালব্ধ হইবে, চন্দ্রদেবের নাম যেন ইহার সহিত
জড়িত থাকে।”
“উত্তম। এই খাদ্যের আকৃতি চন্দ্রবৎ হইবে। তুমি ইহার
নামকরণ করিয়াছ?”
“না, প্রভু।”
“সরস্বতী, আপনি ইহার নামকরণ করিতে চান?”
বাগ্দেবী গণপতির পানে ক্রুদ্ধ দৃষ্টিপাত
করিলেন, তাহার পর স্বর্ণথালিকার পানে তাকাইয়া দীর্ঘশ্বাস ফেলিলেন। “মানবসমাজের খাদ্যরুচির শ্রেষ্ঠ
পুরস্কার হইবে এই খাদ্য। ছাগমাংসের সন্নিবেশে ইহা আজিকার ন্যায় অমৃততুল্য স্বাদ
লাভ করিবে। কাব্যশাস্ত্র অনুসারে রুচির সহিত অন্ত্যমিল রাখিয়া ইহার যোগ্য নাম হইবে
লুচি।”