“তুই পারবি, বাপি?”
“পারব।”
“এটা কিন্তু বিরাট, বিরাট রিস্কের ব্যাপার। তুই
পারবি না রে।”
“একটু ভরসা রেখে দেখ্ না, দিদি। পুরো
ডিপার্টমেন্ট তো মেনে নিয়েছে।”
“দেখ্ বাপি, ওর কিন্তু কোনও মায়াদয়া নেই। সিরিয়ল
কিলারের সাইকোলজি মাথায় রাখিস্। আগের খুনগুলোয় কিন্তু ও কোনও প্রমাণ রাখেনি।”
“জানি। নিশ্চিন্ত থাক্, আমি রেডি। আর্মড থাকব।”
“তাও...”
“পারব। ভাবিস্ না। তুই শুধু ওদিকটা সামলা।”
ভাইয়ের ওপর বরাবরের ভরসা ইন্সপেক্টর অজন্তা
চৌধুরীর, কিন্তু এবারে বিপদ বড় বেশি। কেন যে তিনি প্ল্যানে ওকে জড়াতে গেলেন...
***
“আপনি কী বলছেন, ইন্সপেক্টর রথ?”
“দেখুন, আমারা এতদিন বলিনি কারণ আমি আগে নিশ্চিত
হতে চেয়েছিলাম। আপনার স্ত্রী নিশ্চিতভাবে সিরিয়ল কিলার, এবং আমাদের কাছে তার
প্রমাণ আছে।”
“কী প্রমাণ?”
“আপনার স্ত্রীর বাড়িতে কে কে আছেন, আপনি জানেন,
বেদব্রতবাবু?”
“ইয়ে, না, তবে...”
“আপনাদের কতদিনের আলাপ?”
“সদ্য, এই তিনমাস...”
“তিনমাসের আলাপে আপনি বিয়ে করতে রাজি হয়ে গেলেন,
বেদব্রতবাবু? কতটুকু চেনেন ওঁকে আপনি?”
“না, মানে, ওর অফিস...”
“অফিসের কী? আপনার সঙ্গে আপনার স্ত্রী এক কোলিগের
আলাপ করিয়েছিলেন, এই তো?”
“হ্যাঁ।”
“দেখুন তো, বেদব্রতবাবু,
ইনিই সেই কোলিগ কিনা?”
“রূপা মুখার্জি?”
“মুখার্জি-টুখার্জি নন। ইনি পলক সেন, সিরিয়লে খুচরো রোলে অভিনয়
করেন। নিন, মিস্ সেন, শুরু করুন...”
“মিস্ রায় আমাকে টাকা অফার করেছিলেন, তিরিশ
হাজার, ঐদিন ওঁর কোলিগ সাজার জন্য। আমি সরি, বেদব্রতবাবু, কিন্তু আমি আপনার মিস্
রায়ের সঙ্গে এক অফিসে কাজ করি না।”
“আপনি...”
“দাঁড়ান বেদব্রতবাবু, মিস্ সেনের বোধহয় আরও কিছু
বলার আছে।”
“যেটা আপনাকে বলছিলাম, ইন্সপেক্টর রথ। এর আগেও
মিস্ রায় আমাকে অফার করেছিলেন; এর আগেও আমি ওঁর কোলিগ হয়েছি।”
“কতবার?”
“চার, না, পাঁচবার বোধহয়। আর প্রতিবারই প্রচুর
টাকা দিয়েছিলেন উনি। প্রতিবারই আলাদা আলাদা লোক ছিল।”
“একটা কথা বলুন, মিস্ সেন। আপনি তো জানতেন এর
আগে যতজনের সঙ্গে আপনাকে আলাপ করিয়েছিলেন মিস্ রায়, প্রত্যেকেই...”
“না। আমি খবরের কাগজ পড়ি না। আপনি কাউকে
জিজ্ঞেস করে দেখতে পারেন। টাকার আমার সত্যিই দরকার, কিন্তু যদি জানতাম আমি কারুর
মৃত্যুর জন্য দায়ী হব, আমি মরে গেলেও রাজি হতাম না।”
“বিশ্বাস হল, বেদব্রতবাবু?”
“কিন্তু...”
“আজ ফুলশয্যা, তাই নিয়ে ভাবছেন তো?”
“হ্যাঁ, মানে...”
“আপনার কোনও আত্মীয়-বন্ধু নেই। আপনি অনাথ আশ্রমে
বড় হয়েছেন। আর মিস্ রায় বেছে বেছে এই প্রোফাইলটাকেই টার্গেট করেন। একা, ব্যাচেলর,
যাকে সহজে বোকা বানানো যায়...”
“তাহলে...”
“আপনি ভাববেন না বেদব্রতবাবু। আজ আপনি যাবেন না। আপনার
বদলে আজ যাবেন আমাদের এক অফিসার।”
“কিন্তু ও মানবে কেন?”
“আপনি ও নিয়ে ভাববেন না। আপনার আর বাপি চৌধুরীর
চেহারায় রীতিমত মিল; মেকআপ করলে অন্ধকারে মিস্ রায় চিনতে পারবেন না, গ্যারান্টি
দিচ্ছি।”
“আমি এই মেয়েটার জন্য... মেধাকে...”
“সেসব ভাববেন না আপনি। মেধাদেবী অত্যন্ত বিচক্ষণ মহিলা। এখনও
দেরি হয়নি। ওঁর সঙ্গে আমার কথা হয়ে গেছে।”
***
“মেধা?”
“বেদ?”
“তুমি পারবে, আমাকে ক্ষমা করতে?”
“বেদ... তুমি তো জানো... আমি বলেছিলাম, অপেক্ষা
করব তোমার জন্য।”
“আবার নতুন করে শুরু করব আমরা?”
“কিন্তু বেদ, তুমি আমাকে ভালবাসো তো?”
“বাসি, মেধা। ভুল করেছিলাম মানুষ চিনতে।”
“এটা তো তুমি রিগ্রেট করছ, বেদ। তুমি আমাকে কি
সত্যিই ভালবাসো?”
“বাসি না?”
“আমার তো মনে হয় তুমি সব জানতে পেরে ফেরার চেষ্টা
করছ। আমার জন্য, আমাদের জন্য নয়; স্বার্থপরের মত, নিজের জন্য ফিরতে চাইছ।”
“মেধা...”
“তুমি ভালবাসতে শেখোনি, বেদ। তুমি ওকে ভালবেসেছিলে;
ইন ফ্যাক্ট, এতটাই যে ওর জন্য আমাকে ছেড়ে চলে গেছিলে। আর আজ একটা অচেনা মডেলের
কথায় তুমি ওকে অ্যারেস্ট করাতে চাইছ। যদি ওদের অ্যাসেসমেন্ট ভুল হয়? হয়ত ওর ফাঁসিও
হতে পারে...”
“মেধা!”
“না বেদ। তুমি যদি ওকে বাঁচাতে না চাও, কাল আমার
কিছু হলে তুমি আমাকেও না বাঁচাতে চাইতে পারো।”
“কিন্তু...”
“না বেদ। ভাল থেকো।”
***
দরজা ঠেলে ঢুকলেন বেদব্রত সান্যাল। ভেজানোই ছিল।
খাটের ওপর শাপলা রায়ের মুখে সলজ্জ হাসি। সে
হাসিতে নির্মমতার চিহ্নমাত্র নেই।
ইন্সপেক্টর রথ কি তাহলে ভুল করলেন?
বিছানার দিকে এগোলেন বেদব্রতবাবু। ফুল। অনেক ফুল।
আজ ফুলশয্যা। বাপি চৌধুরী না কার কথা বলেছিলেন না ইন্সপেক্টর রথ...?
ফুল...
পকেটে সেলফোনটা বেজে উঠল। চমকে উঠলেন
বেদব্রতবাবু। রথ।
“আপনি তো আচ্ছা লোক মশাই! আপনার মাথা খারাপ হয়েছে?
আমাদের লোক বাইরে রেডি হয়ে বসে আছে...”
“আপনি ভুল করছেন ইন্সপেক্টর রথ।”
“আপনি কি পাগল হয়ে গেছেন? আপনি তো কেস ফাইলগুলো
পড়েছেন!”
শাপলার দিকে তাকালেন বেদব্রত সান্যাল। শাপলার
হাসিতে কুহক, কিন্তু চোখে...?
ও কার চোখ?
দৌড়ে বেরোলেন বেদব্রত। শাপলা চিৎকার করে ডাকল
বোধহয়, “বেদ... বেদ...”
বেরোনোর সময় ধাক্কা লাগল বাপি চৌধুরীর সঙ্গে। ঘুরে
দেখলেন বেদব্রতবাবু, সুইচ টেপার শব্দ, অন্ধকার ঘর, শাপলার গলা...
আলো নেই কোত্থাও। শুধু শব্দ। নারীপুরুষের
কণ্ঠস্বর। প্রগল্ভ কণ্ঠস্বর।
পুলিশ যে ঠিক বুঝেছে তার কী গ্যারান্টি?
যদি শাপলাকে মেরে ফেলে ওরা, আজকের অপারেশনে?
না বেদ। তুমি যদি ওকে বাঁচাতে না চাও, কাল আমার
কিছু হলে তুমি আমাকেও না বাঁচাতে চাইতে পারো।
দরজা ঠেলে ঢুকলেন বেদব্রতবাবু। বাপি চৌধুরীর
পায়ের কাছে মেঝেতে পড়ে শাপলার রক্তাক্ত দেহ। তার ডান হাতে নখ, না না, বাঘনখ।
শিবাজির ছিল। সেই বাঘনখ।
চিৎকার করে উঠলেন বেদব্রত সান্যাল। ঝাঁপিয়ে পড়লেন
শাপলার ওপর, তারপর বিছানায়, টেনে ছিঁড়ে ফেললেন সমস্ত ফুল... সব মিথ্যে...
maane... JUST!!! :D :D :D
ReplyDeletetui parish, tor hobe. toke tellywood loophey nebe. alternate career paka. TRP dekhbi kemon "jack & the beanstalk" 'er moto megh chhariye giant der deshe giye pouchhabe.
hok hok... aaro hok!
অজস্র ধন্যবাদ! :D
Deleteবাংলা সিরিয়াল-এর একজন একতা কাপুর দরকার ছিল, ত্রিভুবন গুপ্তের মত ডায়ালগ-বাজি করতে করতে এসে গেলেন অভিষেক।
ReplyDeleteসে আর বলতে?
DeleteJio pagla lekha puro!! :D
ReplyDeleteএক্কেবারে!
DeleteEeekk
ReplyDeleteঅর্থাৎ?
Deleteএটা যা-তা! :) :) :)
ReplyDeleteখাসা হয়েছে|
হেঁ হেঁ।
DeleteNazuk, nazuk.
ReplyDeleteতা বটে।
Deletepresent occupation ta ki khub tiriing mone hochche? tai ei alternate career option ta jhaliye nichcho?
ReplyDeleteআপনাদের নিয়ে এই সমস্যা। বঙ্গসংস্কৃতিকে আপনারা বড্ড হালকাভাবে নেন।
Deleteএতো সময় পায় কোদ্দিয়ে মানুষ?
ReplyDeleteসে আর কী বলব দিদি...
Deleteovinobo kolponashakti!! darun
ReplyDeleteআর ভাই।
Deleteতুমি গল্প লেখো, আমি সেটা চিত্রনাট্য বানাই, হ্যাঁ? মেগার থেকেও ভাল মেগা হবে।
ReplyDeleteএক্কেবারে, জাস্ট ফাটিয়ে দেব।
Deleteহা হতোস্মি
ReplyDeleteপতন ও মূর্ছা?
Deletebahudin por eirokom ultra level nongra lekha porlam...nah guru apni bhalo(mirakkel e rajatavo babu eibhabei bolen)..
ReplyDeletedarun..mane ami to prothome barbar kore porchi,choritro gulo barbar kore..guile jachche...abar porchi.tarpor frustrated hoe bhablam..dur last pata ta age pore nei..ke khuni..seirakam..dekhi..o baba..puro..K*PD..
serial priyo ma,kakima,boudi,masi,pisi,sobaike ei lekhata obbosso porano uchit..ar ami to bou ke poraboi..
prosenjit
এটা মানে জাস্ট...ফাটাফাটি, অসাধারণ যাকে বলে। :)
ReplyDelete