"কালজয়ী বাংলা গান " কথাটা আমরা আজকাল কারণে-অকারণে দুমদাম ব্যবহার করে বসি। এটা অনুচিত। "আমার নাম এন্টনি" জাতীয় কিছু গান বাদ দিলে কথাটা নেহাৎই অত্যুক্তির পর্যায়ে চলে যায়।
"আমার নাম এন্টনি" কেন কালজয়ী সে প্রসঙ্গে আসি এবার। প্রথমেই বলি, আমি "এন্টনি" উচ্চারণটা আর কখনও শুনিনি। উচ্চারণের দোষ নয়, কারণ কিশোরকুমার "অমর আকবর অ্যান্থনি"র গানে দিব্যি "অ্যা" বলেছেন।
হয়ত অ্যান্টনি বা অ্যান্থনিকে বাংলায় এন্টনি বলে। কে জানে? আমার এটা শুনলেই এন্টালির কথা মনে পড়ত।
যাইহোক, আরেকটু এগোই।
*
"কাজের কিছু শিখিনি
লার্নিং কিংবা পেইন্টিং অর সিংগিং।"
এটা একটা রীতিমত গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আমি যতবার ছোটবেলায় গানটা শুনতাম, ভাবতাম ওটা নির্ঘাত আর্নিং। লার্নিং মানে তো শেখা। শেখা আবার শেখা যায় নাকি?
কিন্তু এখানেই রহস্যের শেষ নয়। আরেকটু এগোলে আছে "শিখিনি তো লার্নিং ফর আর্নিং"। এটা শুনে খানিকটা তাও বুঝেছিলাম। লার্নিং দু'রকমের হয়, ফর আর্নিং আর ফর আদার পার্পাজেস। এন্টনি কোনওটাই শেখেনি (শুরুতেই বলেছে এটা)। তারপর কেন "ফর আর্নিং" বলেছে সেটা অবিশ্যি বুঝিনি।
"সিংগিং" না শিখেও গান গাইতে পারাটায় অবাক হয়নি। কিশোরকুমার নিজেই তাই করতেন।
*
"আমি ভবঘুরে সমাজের MLA (হুঁ বাবা, MLA)
উধাও হয়ে যাই কিছু না বলে
আমি বাঁধা ছকেতে কখনও
চলিনি তো কোনওদিন"
ভবঘুরে সমাজের এমেলে হয় আমার ধারণা ছিল না। ওরা তো ভবঘুরে, ঠিকানা নেই, ওদের ভোটারস আইডি হবে কীভাবে, এই জাতীয় চিন্তা আমাকে কুরে কুরে খেত। তবে এন্টনির যা সিভি পরের তিনটে লাইনে বলেছে তাতে ওর ভোট পেতে বিশেষ আপত্তি হবে বলে মনে হয় না।
*
"যত হাসি খুশি ছেলেখেলা পেয়েছি
আমার দু”পকেটে ভরে নিয়েছি
হুঁ হুঁ, পকেটে ভরে নিয়েছি!"
এইখানটা একটা অস্বস্তি হত, কিন্তু কেন সেটা বুঝিনি। এর পরের অংশটা বরং বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
"ডলার টাকা পাউন্ড আমি চাইনা
চাইনা তো ইস্টার্লিং"
ছন্দ মেলানোর জন্য নাহয় "স্টার্লিং"এর আগে "ই" জুড়ে "ইস্টার্লিং" করেছে। কিন্তু পাউন্ড চাই না আর স্টার্লিং চাই না দু'টোর কথা আলাদাভাবে বলার কী দরকার ছিল?
পাউন্ডের বদলে মার্কজাতীয় কিছু বললেও দিব্যি ছন্দ থাকত। তাহলে কি ইস্টার্লিং মানে আলাদা কিছু? ঈস্টার সংক্রান্ত কিছু?
কে দেবে এইসব প্ৰশ্নের উত্তর?
No comments:
Post a Comment