গুরুচণ্ডা৯তে ক্রস-পোস্টেড!
***
এটা গতকালই লিখব ভেবেছিলাম, তালেগোলে হয়ে উঠল না। মোদ্দা
কথা হল, শচীন রিটায়ার করছেন, শেষের আগের টেস্টটা খোদ ইডেনে। ওঁরা - মিডিয়ার লোকজন - নানান্ কথা লিখবেন, প্রাক্তন ধারাভাষ্যকাররা
বলবেন, সাহিত্যিকরা বলবেন, আর - আমরাও কিছু বলব।
এর কয়েকটা ঘটনা আজ ঘটে গেছে। কয়েকটা কাল ঘটবে, কয়েকটা
হয়ত ঘটবেই না। বেশিটাই আনুমানিক। তবে ঐ, লিখতে তো ক্ষতি নেই!
***
বিষয়: ধোনি টস করতে গেলেন।
আনন্দবাজার: শেষ সিরিজ। ১৯৮ টেস্টের অভিজ্ঞতা সত্ত্বেও
বিশ্বক্রিকেটের সবথেকে বর্ষীয়ান সদস্যের বুকও আজ ধুকপুক করছে। বুক চিরে হঠাৎই
বেরিয়ে এল দীর্ঘশ্বাস। আজ যদি বিনোদটা পাশে থাকত...
আজকাল: প্যাভিলিয়নে বসে শচীনের নিশ্চয়ই আজ সৌরভের কথা
মনে পড়ছে। এই টসটা তো ওরই করতে যাওয়ার কথা ছিল।
অজয় বসু (যদি বাঁচতেন): আকাশের বুক চিরে একটা গাংচিল উড়ে যাচ্ছে, তার দিগন্তবিস্তৃত পাখা মেলে
– উড়ছে, উড়ছে, একি, টস হচ্ছে!
বঙ্কিমচন্দ্র: হে রাজন্! মুদ্রাস্ফালন একপ্রকার ক্রিয়া, যা
দ্বারা কাহারা কাহাদিগের উদ্দেশ্যে চর্মগোলক প্রেরণ করিবে তাহা নির্ধারিত হইয়া
থাকে।
আমরা: শচীন জানেন, টস জিতলে ব্যাটিং অবধারিত, তাই কমেন্টেটর
আগে যার কাছে মাইক নিয়ে গেল তার ওপর নির্ভর করে প্যাডফ্যাড পরবেন। আর হ্যাঁ,
হেলমেটটাও।
***
বিষয়: ভারত ফিল্ডিং করতে নামল।
আনন্দবাজার: নামার আগে একবার আকাশের দিকে তাকালেন সচিন। মনে
পড়ল গাওস্করের মুখ, সেই প্যাডগুলো। চব্বিশ বছরের কেরিয়র নিমেষের মধ্যে চোখের সামনে
সিনেমার ফ্ল্যাশব্যাকের মত ভেসে উঠল। কমেন্ট্র বক্সের দিকে তাকিয়ে একবার তাকালেন
মুখ তুলে। ঐ তো সৌরভ, রাহুল – লক্ষ্মণটা কোথায় গেল? নিশ্চয়ই পেছনে বসে আছে? এই
মাঠেই তো, এই ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গেই, লক্ষ্মণ আর আমি, মোটে এগারো বছর আগে, ...
আজকাল: চির-উপেক্ষিত বাংলার শামিকে পাশে নিয়ে শচীন ইডেনে
নামলেন।
অজয় বসু (যদি বাঁচতেন): আকাশের বুক চিরে একটা গাংচিল উড়ে যাচ্ছে, তার দিগন্তবিস্তৃত পাখা মেলে
– উড়ছে, উড়ছে, একি, ভারত নেমে পড়েছে!
শরৎচন্দ্র: দেবদা, তুমি যাবে না মাঠে? ওদের চ্যালেঞ্জ নিতে
বারণ করবে না?
আমরা: আগে ব্যাট পেলে ভাল হত, কিন্তু যাক্গে। অশ্বিন আর
ওঝা ভরসা।
***
বিষয়: শামির মারাত্মক তৃতীয় স্পেল।
আনন্দবাজার: উইকেট পড়ছে না। স্যামুয়েলস-ব্রাভোর খেলায় হঠাৎ
ভিভ-লয়েডের স্বাচ্ছন্দ্য। স্পিনাররা নাজেহাল, ম্যাচ নাগালের বাইরে বেরিয়ে যাচ্ছে। প্রথম
স্লিপ থেকে কোহ্লি ধোনির সঙ্গে গভীর আলোচনায় মগ্ন। এমন সময় সচিন এসে যোগ দিলেন,
বললেন, “তুমি ভুলে যাচ্ছ মাহি, তোমার হাতে এমন একজন পেসার আছে, যে এই পিচ নিজের হাতের
তালুর মত চেনে।”
আজকাল: ছাই দিয়ে আগুন চাপা যায় না, ধোনিবাবু। বাঙালি আর কত
অবিচারের শিকার হবে?
অজয় বসু (যদি বাঁচতেন): আকাশের বুক চিরে একটা গাংচিল উড়ে যাচ্ছে, তার দিগন্তবিস্তৃত পাখা মেলে
– উড়ছে, উড়ছে, একি, উইকেট পড়ছে!
অবনীন্দ্রনাথ: অম্নি সারা ইডেনে যত লোক, যত লোক ছিল সব একসঙ্গে বলে উঠল
“ম-হ-ম্ম-দ শা-মি!”
আমরা: যাক্, অনেকদিন পর একটা ভাল পেসার এল।
***
বিষয়: চন্দরপলের ব্যাটিং।
আনন্দবাজার: ওঝার অ্যাপিল নস্যাৎ করে দিলেন আম্পায়ার। গ্যালারিতে
চিৎকার উঠল। ভেসে এল টুকরো মন্তব্য – “আমরা তোমার আম্পায়ারিং দেখতে আসিনি, সচিনের
ব্যাটিং দেখতে এসেছি।” বাংলা বোঝেন না, কিন্তু নিজের নাম শুনে ক্রিকেটের ঈশ্বরের
মুখে দেখা দিল এক চিলতে হাসি। জায়েন্ট স্ক্রীনে তা দেখে ইডেন হাততালিতে ফেটে পড়ল।
আজকাল: এই কুৎসিত ব্যাটিং ক্রিকেটের কলঙ্ক। মনে পড়ে
সৌরভের রাজকীয় কভার ড্রাইভ?
অজয় বসু (যদি বাঁচতেন): আকাশের বুক চিরে একটা গাংচিল উড়ে যাচ্ছে, তার দিগন্তবিস্তৃত পাখা মেলে
– উড়ছে, উড়ছে, একি, চন্দরপল ব্যাট করছে!
লীলা মজুমদার: শচীন এসে বলল, তুমি এত রান করো, এইর’ম বাজে
স্টান্স কেন? চন্দরপল্ ফিক্ করে হেসে বলল, “কী করব, ওব্বেস!” এই বলে টুক্ করে
একটা কভার ড্রাইভ করে চার মারল। এই অনাছিষ্টি কাণ্ড দেখে সবাই মুখে কুলুপ এঁটে বসে
রইল।
আমরা: এই লোকটা কোনওদিন কদর পেল না।
***
বিষয়: ইডেনের দর্শক।
আনন্দবাজার: যখনই তিনি আউটফিল্ডে যাচ্ছেন, ইডেন উঠে দাঁড়িয়ে
সম্মান জানাচ্ছে। এক বল-বয়কে অটোগ্রাফ দিতে গিয়ে তাঁর বুক ধক্ করে উঠল - একদম
অর্জুনের মত দেখতে না? সই করার সময় হাতটা একটু হলেও কেঁপে গেল কী?
আজকাল: তাঁর ছোটবাবুর শেষ টেস্ট, তিনি কি পারেন না এসে
থাকতে? এই মাঠেই তো আজ থাকার কথা ছিল তাঁর।
অজয় বসু (যদি বাঁচতেন): আকাশের বুক চিরে একটা গাংচিল উড়ে যাচ্ছে, তার দিগন্তবিস্তৃত পাখা মেলে
– উড়ছে, উড়ছে, একি, ইডেন হাততালি দিচ্ছে!
পরশুরাম: এক হতভম্ব দর্শক আরেকজনকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “এক্সকিউজ
মি প্রভু, আপনি কি ভিজেয় মার্চেন্টকে দেখেছেন?”
আমরা: কী রে, এখানে শচীনের লাস্ট ম্যাচ, আজও এত খালি
সীট?
***
বিষয়: শচীনের উইকেটপ্রাপ্তি।
আনন্দবাজার: বল হাতে নিয়ে হঠাৎ মনে পড়ল বান্দ্রার সাহিত্য
সহবাস কলোনীর সেই দিনগুলোর কথা। তখন তো তিনি জোরে বল করতেন। আজ, কেরিয়রের সায়াহ্নে
এসে একান্ন সেঞ্চুরির মালিক পাঁচ ফুট চারকে লেগস্পিন করতে হচ্ছে। দুর্ভাগ্য!
আজকাল: তাঁর ছোটবাবুর শেষ টেস্ট, তিনি কি পারেন না এসে
থাকতে? আজ তো মাঠেই থাকার কথা ছিল তাঁর।
অজয় বসু (যদি বাঁচতেন): আকাশের বুক চিরে একটা গাংচিল উড়ে যাচ্ছে, তার দিগন্তবিস্তৃত পাখা মেলে
– উড়ছে, উড়ছে, একি, ইডেন হাততালি দিচ্ছে!
উপেন্দ্রকিশোর: তোমরা বল করতে পারো? আমি একজন লোককে চিনতাম, সে
সবরকমের বল করতে পারত। যেই সে ইডেনে একটা উইকেট নিল, অমনি সবার সে কি হাততালি!
আমরা: আর চারটে হলেই পঞ্চাশটা। হবে?
***
বিষয়: ভারতের দ্বিতীয় উইকেট পার্টনারশিপ।
আনন্দবাজার: কমেন্ট্রি বক্সে বসে শাস্ত্রী লক্ষ্মণের কানে
কানে বললেন, “শচীন এলে স্লটটা কিন্তু আমাকে ছেড়ে দিতে হবে।” মুহূর্তের জন্য থতমত
খেয়ে গেলেন
৮,৭৮১ টেস্ট রানের মালিক। এই মাঠে তো
তিনিই রাজত্ব করে এসেছেন বরাবর – আজ অন্যের হাতে মাইক ছেড়ে দিতে হবে?
আজকাল: সৌরভ মাঠে থাকলে আজ উইকেট ছুঁড়ে দিতেন শচীনের
স্বার্থে। কিন্তু এই তরুণ তুর্কীর দল – এরা শুধু রান বোঝে। নতুন প্রজন্মকে এই শেখালেন
আপনি, ধোনিবাবু?
অজয় বসু (যদি বাঁচতেন): আকাশের বুক চিরে একটা গাংচিল উড়ে যাচ্ছে, তার দিগন্তবিস্তৃত পাখা মেলে
– উড়ছে, উড়ছে, একি, এরা এখনও ব্যাট করছে! সেই গাংচিলটা উড়েই চলেছে, উড়েই চলেছে,
আরও, আরও...
রবীন্দ্রনাথ: শচীনের আগে ব্যাট করিতে আসা বড় বালাই। তাহাদের
রানও করিতে হইবে, আবার তাড়াতাড়ি আউট হইয়া শচীনকে সুযোগও দিতে হইবে। এই দুইই করিতে
পারে, এমন লোক তো বড় একটা দেখি না!
আমরা: টিকে যাক্; শচীন তো রইলই। হয়ে গেলে তো হয়েই গেল।
***
বিষয়: শচীন অবশেষে নামলেন।
আনন্দবাজার: একবার ঘুরে তাকালেন ড্রেসিংরুমের দিকে। আবার তিনি
একা। আজ আর তিনি শ্রীকান্তের দলের ষোল বছরের বালক নন – তিনি আজ চল্লিশের প্রবীণ। বুক
ফেটে একটা দীর্ঘশ্বাস বেরোল ভারতীয় ক্রিকেটের সিনিয়র সিটিজেনের। এই শহর মনে রাখবে
তো তাঁকে?
আজকাল: আজ সৌরভ নেই। অচেনা তরুণবাহিনীর করতালির মধ্যে
শচীন নামলেন ব্যাট করতে ইডেনে।
অজয় বসু (যদি বাঁচতেন): আকাশের বুক চিরে একটা গাংচিল উড়ে যাচ্ছে, তার দিগন্তবিস্তৃত পাখা মেলে
– উড়ছে, উড়ছে, একি, শচীন নেমে পড়েছে!
সুকুমার রায়: আবার
সে এসেছে ফিরিয়া।
আমরা: পঞ্চাশ করে দে বস্, তাহলেই হবে।
***
বিষয়: শচীন ব্যর্থ হলেন।
আনন্দবাজার: যাবতীয় সংযমের বাঁধ ভেঙে রাহুল দৌড়ে যাচ্ছিলেন
সচিনকে সামলাতে; সৌরভ-লক্ষ্মণেরা মনে করালেন, তাঁদের মত রাহুলেরও দিন শেষ,
ড্রেসিংরুমে ঢোকার রাস্তা চিরতরে বন্ধ। একমাত্র সানিই অবিচল। তিনি তো জানেন। উঠে
এসে রাহুলের কাঁধে রাখলেন সহানুভূতির হাত।
আজকাল: শচীন আউট হতেই নেমে পড়লেন কোহ্লি। ভাবা যায়,
শচীনের শেষ সিরিজ, ইডেনে খেলা, আর পাঁচে সৌরভ নেই? চ্যাপেলকে কোনওদিন ক্ষমা করবে
ইডেন?
অজয় বসু (যদি বাঁচতেন): আকাশের বুক চিরে একটা গাংচিল উড়ে যাচ্ছে, তার দিগন্তবিস্তৃত পাখা মেলে
– উড়ছে, উড়ছে, একি, শচীন আউট!
পূর্ণেন্দু পত্রী: ভেবেছ পালাবে গর্তে? হৃৎপিণ্ডের ভিতরে থাকে যে ঝর্ণা, দিতে হবে চান
করতে।
আমরা: ঠিক আছে, সেকেন্ড ইনিংস আছে তো!
***
বিষয়: শচীন ছড়ালেন না, মোটামুটি গোটাচল্লিশ রান করে আউট হয়ে গেলেন।
আনন্দবাজার: কাম্বলি-আমরেরা আসতে পারেননি, কিন্তু সচিন বয়ে
এনেছেন আচরেকর স্যারের কোচিংএ অনেক অনেকদিন কাটানোর স্মৃতি। আজ যদি আচরেকর-স্যার মাঠে
থাকতেন! তাও সচিন ব্যাট তুলে জনতার করতালি গ্রহণ করলেন, মুখ তুলে একবার তাকালেন
প্যাভিলিয়নের দিকে। “এই তাকানোটা আমি ভুলব না,” শিবরামকৃষ্ণণ চোখ মুছে হেডেনকে
বললেন।
আজকাল: সম্মান জানাতে শিখলেন না, ধোনিবাবু? বেরিয়ে এসে
অভ্যর্থনা জানালেন না শচীনকে? সৌরভ-জমানায় ভাবা যেত এসব?
অজয় বসু (যদি বাঁচতেন): আকাশের বুক চিরে একটা গাংচিল উড়ে যাচ্ছে, তার দিগন্তবিস্তৃত পাখা মেলে
– উড়ছে, উড়ছে, একি, শচীন আউট! কত করল?
বিভূতিভূষণ: শচীন
তেন্ডুলকর আউট হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইডেনে সেকালের অবসান হইয়া গেল।
আমরা: হাসি...
***
বিষয়: শত্রুর মুখে ছাই দিয়ে শচীন সেঞ্চুরিই করে ছাড়লেন।
আনন্দবাজার: সচিন জানতেও পারলেন না, পুরোনো কলোনির বন্ধু,
শিবাজি পার্কের মালি – সবাই আজ মানত করেছিলেন শতরানের জন্য। আকাশের তাকিয়ে ব্যাট
তোলার পর সচিন ভাবলেন, ত্রিনিদাদে ঘুমিয়ে থাকা প্রিয় বন্ধু লারা জানতেও পারলেন না!
যাক্, গিয়ে একটা এস-এম-এস ছেড়ে দিলেই হবে। কিন্তু ক্যালিস? ক্যালিস পারবে এতগুলো
সেঞ্চুরি করতে?
আজকাল: আজকের দিনেও একবার সৌরভের কথা মনে পড়ছে না
শচীনের? মনে পড়ছে না, তাঁর স্বর্ণযুগ এসেছিল সৌরভের হাত ধরে? নিছক তথ্যের
কচকচানিতে ধোনি-ফ্লেচাররা অনেক কথা বলতে পারেন, কিন্তু সৌরভ ছাড়া শচীন শচীন হতেন?
অজয় বসু (যদি বাঁচতেন): আকাশের বুক চিরে একটা গাংচিল উড়ে যাচ্ছে, তার দিগন্তবিস্তৃত পাখা মেলে
– উড়ছে, উড়ছে, একি, শচীন সেঞ্চুরি করেছে!
শরদিন্দু: মা, শীগ্গিরি
এসো, শচীন হেলমেট খুলে তাতে তিনটে-পাঁচটা চুমু খাচ্ছে!
আমরা: কান্না...
***
বিষয়: খেলা শেষ। ভারত জিতল। শচীন শেষবারের মত বেরোলেন
ইডেনের দর্শকের সামনে।
আনন্দবাজার: মাইক হাতে মাঠের মাঝখানে যাওয়ার আগে শাস্ত্রীর
সঙ্গে দেখা হয়ে গেল রোহিত শর্মার। রোহিত জিজ্ঞেস করলেন, “আমি পারব?” কান্না চেপে
রেখে শাস্ত্রী সানির দিয়ে আঙুল দেখিয়ে ঢুকে গেলেন মাঠে। সচিনের বিদায়মুহূর্ত বলে
কথা – সৌরভ-রাহুল-লক্ষ্মণ কারুরই চোখের জল বাঁধ মানছে না।
আজকাল: সেঞ্চুরি করলেন শচীন, ম্যাচ জেতার কৃতিত্ব নিয়ে
গেলেন ধোনি। ফ্লেচার-আমলে আর কী আশা করতে পারি আমরা?
অজয় বসু (যদি বাঁচতেন): আকাশের বুক চিরে একটা গাংচিল উড়ে যাচ্ছে, তার দিগন্তবিস্তৃত পাখা মেলে
– উড়ছে, উড়ছে, একি, ভারত জিতে গেছে!
অনিল ভৌমিক: ফ্রান্সিস
কতক্ষণ ঘুমিয়ে ছিল খেয়াল নেই। হঠাৎ খেয়াল হল কে যেন ধাক্কা দিচ্ছে। হ্যারি। “ভারত
জিতে গেছে,” ওপাশ থেকে মারিয়া বলে উঠল।
আমরা: হাসি, নস্টালজিয়া, আরও নানারকম...
***
বিষয়: সৌরভের প্রতিক্রিয়া।
আনন্দবাজার: “জীবদ্দশাতেই তো সব দিয়ে যেতে হল, বন্ধু,”
দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে উঠলেন সৌরভ। আর কেউ শুনতে পেলেন না। দ্রাবিড়-লক্ষ্মণরা তো
নিজেদের মধ্যে আলোচনাতেই মগ্ন। সানি-রবি নিচে। তিনি একা বসে রইলেন নিজের মাঠে।
আজকাল: শ্রীনিবাসনের চাপে পড়ে স্টার স্পোর্টস বাধ্য হল
গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে সৌরভের হাত থেকে মাইক কেড়ে নিতে।
অজয় বসু (যদি বাঁচতেন): আকাশের বুক চিরে একটা গাংচিল উড়ে যাচ্ছে, তার দিগন্তবিস্তৃত পাখা মেলে
– উড়ছে, উড়ছে, একি, সৌরভ কই!
সত্যজিৎ: সৌরভের
হৃদয় চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে ধূলোর মত চারদিকে ছড়িয়ে পড়ল, আর সেই ভগ্নস্তূপ থেকে একটা রক্ত
হিম করা অশরীরী কন্ঠস্বর বলে উঠল – “অবসরের পরের অবস্থা আমি জানি!”
আমরা: শচীনকে আজ বাড়িতে ডিনারে ডাকবে বোধহয়।