লক্ষ্মীপূজো।
পূজোর অবিশ্যি বালাই নেই চারদিকে কোথাও। সন্ধ্যের দিকে ইতস্ততঃ শাঁখের আওয়াজ শুনেছিলাম ঠিকই, কিন্তু এখন চারিদিক নিস্তব্ধ। রাত বারোটার কাছাকাছি। পূর্ণিমা, তাই অন্ধকার নেই বিশেষ, দিব্যি আলো-ঝলমলে।
বেশ অনেকক্ষণ জানালার সামনে দাঁড়িয়েছিলাম। আমার মধ্যে রোম্যান্টিসিজমের ছিটেফোঁটা নেই, কিন্তু এখনও, এই পঁয়ত্রিশেও, ঘরের মধ্যে জ্যোৎস্নার আলো এসে পড়লে নেহাৎ মন্দ লাগে না। জানালাটা বন্ধ করে দিলাম।
মাথার মধ্যে হাজারটা দুশ্চিন্তা। নানারকমের। এতটাই যে সেলুনে গিয়ে নবরত্ন তেল দিয়ে গুছিয়ে মাথা মালিশ করালে দিব্যি হত। কিন্তু এত রাত্রে কোথায় কী? তার ওপর এবার অক্টোবরের শেষে হঠাৎ শীতের ডিসেম্বরসুলভ আদিখ্যেতা শুরু হয়েছে। রাত্রে পাখা কমিয়ে না দিলে সকালে গায়ে-হাতে-পায়ে বেশ ব্যথা করে ইদানীং - সুতরাং এখন নবরত্ন মালিশ করলে কাল সকালে বিশল্যকরণী স্যারিডন অবশ্যম্ভাবী।
লক্ষ্মীপূজো যেদিন হয় তাকে কোজাগরী পূর্ণিমা বলে কেন? জাগরী মানে জানি, কিন্তু আগে একটা বিটকেল "কো" কেন? হোয়াই দিস কোজাগরী, ডি?
পায়চারি করলাম। ভেড়াও গুনলাম। নাঃ, ঘুম আসার বিশেষ সম্ভাবনা নেই শীগ্গিরি, তবে আসবে হয়ত, অনেক রাত্রে। অনেক অনেক রাত্রে।
সন্ধ্যের হালকা ভিড়ের কলকাতার রাস্তায় পায়ে হেঁটে যে মানসিক চাপটা ম্যানেজ করা জলবৎ তরলং, হাজার স্কোয়্যার ফিটের ফ্ল্যাটের সীমাবদ্ধতায় সেটা দশগুণ হয়ে দাঁড়ায়। এগারোটা গড়িয়ে বারোটা হল, বারোটা গড়িয়ে একটা হওয়ার পথে।
নাঃ, আজ আর হয়ত ঘুম আসবে না।
ভেবে দেখলাম যে কোজাগরীর সঙ্গে গোদাবরী দিব্যি কবিতার মত মিলে যায়; কিন্তু এই চূড়ান্ত উপলব্ধির পরেও ঘুম এল না কিছুতেই।
ঘাড়ে-মাথায় জল দিয়ে, ফেসবূক ঘেঁটে, ইমেল চেক করেও ন যযৌ ন তস্থৌ। রেজনিক-হ্যালিডের সেই যুগান্তকারী বইটা থাকলে একটা চেষ্টা করা যেত, কিন্তু কী আর করা যাবে। নেই।
তার থেকে যাহোক্ কিছু লিখতে বসাই ভাল।
আর তখন, তখনই - লিখতে গিয়েই - মনে পড়ল সুকুমারকে।
বেজার হয়ে যে যার মত করছ সময় নষ্ট -
হাঁট্ছ কত খাট্ছ কত পাচ্ছ কত কষ্ট!
আসল কথা বুঝছ না যে, করছ না যে চিন্তা,
শুনছ না যে গানের মাঝে তব্লা বাজে ধিন্তা?
পাল্লা ধ'রে গায়ের জোরে গিট্কিরি দাও ঝেড়ে,
"দাঁড়ে দাঁড়ে দ্রুম! দেড়ে দেড়ে দেড়ে!"
যাই।
:)
ReplyDelete:D kottodin por oi kobita mone pore gelo! ebar ghumao! X-(
ReplyDeleteকোজাগরী কেন বলে?
ReplyDeleteজানি না। জানতে পারলেই জানাচ্ছি।
DeleteGoogle search korlei jana jachche :)
Deleteগূগ্ল সার্চ করে শুধু জানা যাচ্ছে আশ্বিনের পূর্ণিমাকে কোজাগরী পূর্ণিমা বলে। কিন্তু কেন বলে?
DeleteAhha...
ReplyDeleteshesher kobita ta :)
ReplyDeleteKalke Sukumarer 125th birth anniversary te Bangalir kono sharashobdo na peye hotash hoye chilam.Aajke sheta ketegelo. Khub bhalo laglo porey.Bishesh kore Sukumar ke bhule jaoa jayena eta dekhey.
ReplyDeleteকাল নয়, আজ জন্মবার্ষিকী। ৩০শে অক্টোবর।
Deleteওঃ, আচ্ছা - কাল হতাশ ছিলে। বুঝিনি।
DeleteAajkeo ki khub bojha gechey? Kothao kono sharashobdo ki aachey?
Deleteসরস্বতীর বরপুত্র। লক্ষ্মী ছেলে।
ReplyDeleteহ্যাঁ। সরস্বতীর বরপুত্র না হলে মাত্র ছত্রিশ বছর বয়সে অতকিছু লেখা যায় না।
DeleteBeautiful. Khub bhalo laglo :)
ReplyDeleteKi bhishon "mon khharap korte korte hoot kore mon bhalo kora" eta!
ReplyDeleteগুগল বলছে যে এই রাতে মা লক্ষ্মী প্রতিটি ঘরে এসে জিজ্ঞেস করেন "কো জাগরিত?", কে জেগে আছ? যে জেগে আছে, সে টাকা পায়, যে শুইয়া থাকে তাহার ভাগ্যও শুইয়া থাকে। আপনি বুঝি সেই আশাতেই কাল রাতে জেগেছিলেন? ডাক শুনলেন? টাকা পেলেন? কত টাকা? নাকি সোনার মোহর?
ReplyDeleteতা, ওই কো জাগরিত থেকেই কোজাগরী। গুগল বলছে, আমি কিছুই বলছি না। দূত অবধ্য।
কীর'ম একটা সন্দেহ হচ্ছে। তোমার ওপর নয়, গূগ্লের ওপর। কো জাগরিত...?
Deleteশুধু গুগল নয়, আমার মা-ও অনেকদিন আগে আমাকে এই ব্যাখ্যাটাই দিয়েছিলেন। লক্ষ্মীদেবী ঘরে ঘরে এসে জিজ্ঞাসা করেন, "কে জাগে?" যে জাগে তাঁর ঘরে দেবী আসেন, এসে বাড়িশুদ্ধু লোকের ঘুম মাটি করেন। যারা ঘুমোয় তাঁরা আরাম করে ঘুমোতেই থাকে।
Deleteশেষের অংশটুকু মা বলেননি বোঝাই যাচ্ছে।
জাম্বুবান । ( হনুমানের প্রতি) এই কাগজে যা প্রেশক্রিপশন লিখে দিচ্ছি,এই ওষুধগুলো চট করে নিয়ে আসতে হবে ।
ReplyDeleteহনুমান । আচ্ছা,কাল ভোর না হতে উঠে নিয়ে আসব ।
জাম্বুবান। না,না, এতো দেরি করলে হবে না । এখনই যা ।
হনুমান । আবার এতো রাত্তিরে কোথায় যাবো ? সাপে কাটবে না বাঘে ধরবে ।
সুগ্রীব । ব্যাটা শখের প্রাণ গড়ের মাঠ ।
জাম্বুবান। না, ওষুধগুলো এখনই দরকার ।
হনুমান । আঃ,হোমিওপ্যাথি লাগাও না ।
জাম্বুবান। যা বলছি শোন ! এই গাছের কথা লিখে দিলাম - বিশল্যকরণী মৃত সঞ্জীবনী- এইসব গাছের শেকড় আনতে হবে ।
হনুমান । আমি ডাক্তারখানা চিনিনে ।
জাম্বুবান। আ মরণ আর কি ! একি কলকাতা শহর পেয়েছিস নাকি যে বাথগেট কোম্পানি তোর জন্য দোকান খুলে বসবে?কৈলাস পাহাড়ের কাছে গন্ধমাদন পাহাড় আছে জানিস তো?
হনুমান । কৈলেস ডাক্তার আবার কে?
জাম্বুবান। ব্যস ! কানের পটহটা দেখি ভারি সরেস – ব্যাটা কৈলেস পাহাড় জানিসনে?
হনুমান । ও বাবা ! সেই কৈলেস পাহাড় ! এতো রাত্তিরে আমি অতদুর যেতে পারব না ।
জাম্বুবান। যাবিনে কি রে ব্যাটা? জুতিয়ে লাল করে দেব । এখনই যা – দেখিস পথে মেলা দেরি করিসনে ।
হনুমান । আমার কান কটকট কচ্ছে-
রাম । আহা,যারে যা,আর গোল করিসনে- নে বকশিস নে ।
...
(লক্ষণের শক্তিশেল)
এইর'ম আর হবে না। হয় না, হয় না, হতে পারে না।
Deletedarun...kojagori di-r rahashyo unmochon hole janiyo :)
ReplyDeletedarun. just darun.
ReplyDeletedebasish choudhury jeta bolechen seta close... kintu actual katha'ta holo "ko jagorah" (h=bisorgo)(courtesy - tomar chandramashi), ebong er folafol debashishbabu ja likhechen seguloi....
ReplyDelete