মূল গল্প: Barney
লেখক: Will Stanton
অনুবাদ নয়, “ছায়া অবলম্বনে”
***
To: Joy.Banerjee@rodentia.co.in
আজ মূষিক অনেকটা সময় একা চুপচাপ বসেছিল। এত বছর রিসার্চ করছি,
শান্ত ইঁদুর আমি দেখিনি তা নয়, কিন্তু এ সে জিনিস নয়। দেখেই বোঝা যায় কিছু একটা ভাবছে।
তুই ভাল থাকিস্। কবে আসবি জানাস্।
*
To: Joy.Banerjee@rodentia.co.in
আজ মাস্কুলাসের ডোজটা আরেকটু বাড়ালাম। কোনও অসুবিধে হল না। তবে
বুদ্ধি যে বাড়ছে সে বিষয়ে সন্দেহ নেই, কারণ আজ দেখি টেবিলের ওপর উঠে আমার দাড়ি
কামানোর আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে মুখ দেখছে।
কাল আরেকটু ডোজ বাড়াব।
*
To: Joy.Banerjee@rodentia.co.in
মারাত্মক ব্যাপার। একটা কৌটোর মধ্যে বিস্কুট রেখেছিলাম ওর
সামনে। ঢাকনাটা খুলে বিস্কুটটা নিল – তা সে তো অনেক ইঁদুরই নেয়, কিন্তু খাওয়ার আগে
ঢাকনাটা আবার পরিয়ে দিল।
এখনও তর্ক করবি? দাঁড়া, এরপর আরও ডিটেল দেব।
*
To: Joy.Banerjee@rodentia.co.in
আরে, আর বলিস্ না, আগের ইমেলটা লিখে আবার আনন্দমঠ শুরু করব,
দেখি বঙ্কিম রচনাবলীর ওপর তিনি বসে। অক্ষরগুলোর দিকে তাকিয়ে চোখ বাঁদিক থেকে ডানদিকে
নিয়ে যাচ্ছে। পড়তে অবভিয়সলি পারছে না, কিন্তু তোর দেখলে মনে হবে পড়ছে। আমার ধারণা
আমাকে পড়তে দেখে নকল করছে।
*
To: Joy.Banerjee@rodentia.co.in
দেখলি তো, ওয়েবক্যামে? এটা নতুন শুরু হয়েছে। ল্যাপটপের কীবোর্ডের
পাশে বসে থাকছে। জ্বালাতন করছে না, কিন্তু কখনও স্ক্রীন কখনও কীবোর্ড দেখেই চলেছে।
সত্যজিৎবাবু আজ জন্মালে “কর্ভাস”এ এটা নির্ঘাত ঢোকাতেন।
*
To: Joy.Banerjee@rodentia.co.in
কাল থেকে একটা কথা মাথায় ঘুরছে, জানিস্ তো? দেখ্,
এক্সপেরিমেন্ট তো সাক্সেসফুল। এবার মূষিককে ছেড়ে দেওয়া উচিত আমার। কিন্তু ওর সংস্পর্শে
এসে যদি বাকি ইঁদুরদের বুদ্ধি ওর মত বাড়ে, আমরা সেফ থাকব?
কোথায় একটা পড়েছিলাম কলকাতা শহরের নিচটা পুরো ঝাঁজরা, ইঁদুরের
গর্তের টানেলে ভর্তি, যেকোনও দিন ধসে পড়বে। তারপর যদি বুদ্ধি আরও বাড়ে, টেকনোলজি
শিখতে শুরু করে, এঁটে উঠতে পারব?
না না, এক্সপেরিমেন্ট আপাততঃ এক্সপেরিমেন্টের জায়গাতেই থাক্।
কাল থেকে ঐ পার্টিশনের ওদিকে রেখেই যা করার করব। হয়ে গেলে চাবি দিয়ে রাখতে হবে।
তেমন হলে হালকা সেডেটিভ।
*
To: Joy.Banerjee@rodentia.co.in
মনে হয় না মূষিক ব্যাপারটা ভালভাবে নিয়েছে। সমানে কিচমিচ
করে চলেছে।
*
To: Joy.Banerjee@rodentia.co.in
একটু আগে সাংঘাতিক কাণ্ড হয়েছে। পার্টিশনের দরজাটা খুলে ঢুকে
সবে আলোটা জ্বেলেছি, এমন সময় তীরবেগে বেরিয়ে গেল। ল্যাচের চাবিটা লাগানো ছিল, নিয়ে
সোজা কুয়োর জলে। দরজা বন্ধ করার আর কোনও উপায় নেই।
তবে তারপর থেকে এক্কেবারে শান্ত, চুপচাপ। ওর বুদ্ধিতে খুশি
হব না শয়তানিতে রাগব না টেনশন করব বুঝে উঠতে পারছি না।
চাবি নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। কুয়োটা অনেক বছরের। এই গরমে
কয়েক ইঞ্চি জল থাকে, তাও হয়ত নয়। কাল দড়ি বেঁধে নেমে আমি তুলে নেব। রিস্ক নিয়ে লাভ
নেই, ওকে আটকেই রাখতে হবে।
*
To: Joy.Banerjee@rodentia.co.in
মূষিককে নিয়ে বেকার টেনশন করছিলাম। আজ কুয়োয় নেমেছি। যতক্ষণ
নামছিলাম ওপর থেকে কিচমিচ শব্দ। বেচারার একা থাকতে বোধহয় অসুবিধে হয়। সেইজন্যই পার্টিশনের
ওদিকে থাকতে চাইছিল না।
জলের ঠিক ওপর অবধি পৌঁছেছি, এমন সময় টর্চটা নিভে গেল। ওপরে
উঠতে বাধ্য হলাম। উঠে দেখি পাথরের গায়ে ঘষা লেগে দড়িটা বেশ অনেকটা ক্ষয়ে গেছে। আর ঐ
সারাক্ষণ কিচমিচ চলছে।
সাবধান করতে চাইছিল নাকি? এত বুদ্ধি ইঁদুরের হয়? হতেও পারে,
কুকুর তো এইর’ম করে থাকে শুনেছি। দেখি, কাল আবার নামব। নতুন দড়ি লাগবে, আর টর্চে
নতুন ব্যাটারি।
*
To: Joy.Banerjee@rodentia.co.in
মুসিকের ম্রিত্যু হয়িয়াছে। আমি খুব কস্ট পাইতেছি। আমি কুয়ার
মদ্দে লাফ দিয়া ম্রিত হইব। তুমি জদি আস অন্যো ইদুর লইয়া আসিবে। মুসিক নাই কিন্তু একানে
উয়ারা মুসিকের মত থাকিবে আর খুসি হইবে।
উয়াদের রাকিয়া তার্পর তুমি চলিয়া জাইবে। সব ইদুর মেয়ে হয় জ্যানো।
No comments:
Post a Comment