BANNER CREDITS: RITUPARNA CHATTERJEE
A woman with the potential to make it big. It is not that she cannot: she simply will not.
PHOTO CREDITS: ANIESHA BRAHMA
The closest anyone has come to being an adopted daughter.

Monday, August 26, 2019

আকাশে পাতিয়া কান

মূল গল্প: Reunion
লেখক: Arthur C Clarke
অনুবাদ নয়, “ছায়া অবলম্বনে”

----

ভয় পাইও না। তোমাদের সহিত যুদ্ধ করিবার কোনওরূপ প্রবৃত্তি নাই আমাদের। আর প্রবৃত্তি থাকিলেও তোমরা আঁটিয়া উঠিতে পারিতে না, ধূলিকণায় পরিণত হইতে। তোমাদের অস্ত্রভাণ্ডার এতই অপর্যাপ্ত যে শিশুকুলেও তাহা হাসির উদ্রেক ঘটাইবে। কাজেই যুদ্ধ করি বা না করি, ভয় পাইয়া তোমাদের বিন্দুমাত্র লাভ হইবে না। আমাদের এই আগমনের কারণ সম্পূর্ণ পৃথক।

আমাদের কথা যে তোমাদের স্মরণে নাই, সে বিষয়ে আমরা অবগত আছি। তবে অযথা মাথা ঘামাইও না। আর কয় প্রহর পর উপস্থিত হইয়া তোমাদের যাবতীয় কৌতূহলের উপশম ঘটাইব।

তোমাদের পীতবর্ণের সূর্য ইতিমধ্যেই দেখিতে পাইতেছি। এ সূর্য আমাদের পরিচিত। এ সৌরজগৎ একদিন আমাদেরও ছিল। কোটি কোটি বৎসর পূর্বে এই সূর্যের উপাসনা আমরাও করিতাম।

আমরাও তোমাদের মতই মনুষ্যজাতি। পার্থক্য ইহাই, যে তোমরা আত্মবিস্মৃত। আমরা নই। প্রকৃতির রহস্যভেদ আমাদের অভীষ্ট লক্ষ্য হইলেও অতীতের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা আজও অটুট।

আমরা প্রথম আসিয়াছিলাম বহুপূর্বে। মুহুর্মুহু উল্কাপাতে আমাদের গ্রহ তখন বসবাসের অযোগ্য হইয়া উঠিয়াছে। প্রতিবেশী পৃথিবীতে তখন অতিকায় সরীসৃপকুলের রাজত্ব সদ্য সম্পন্ন হইয়াছে। কয়েক দশক পর সৌরজগতের বন্ধন ছিন্ন করিয়া নূতন উপনিবেশের সন্ধানে বহুদূরে পাড়ি দিয়াছিলাম। জ্ঞানের স্পৃহা অনতিক্রম্য।

শুনিয়াছি তাহার পর তোমাদের সভ্যতার সূচনা ঘটে। বানরজাতীয় একশ্রেণীর প্রাণী হইতে তোমাদের উদ্ভবের কাহিনী সম্পর্কে তোমরা অবগত আছ। আমাদের পূর্বপুরুষও বানর।

কয়েক সহস্র বৎসর পূর্বে পুনরায় আসিয়াছিলাম আমরা, তোমাদের সভ্যতা স্বচক্ষে দেখিতে। এখন যেখানে ভারতবর্ষ, সেই স্থলাংশের বিভিন্ন প্রান্তে আমাদের গ্রহের অভিযাত্রীদল ছদ্মবেশে কয়েক বৎসর অতিবাহিত করে।

দুরারোগ্য এক ব্যাধিতে তখন ভারতবর্ষ আক্রান্ত। এই ব্যাধি মূলতঃ মানসিক। সুখের বিষয়, তোমাদের কেহ কেহ বিনা প্রচেষ্টায় এই রোগের প্রকোপ হইতে মুক্তি পাইয়াছিল। কিন্তু যাহারা আক্রান্ত হইয়াছিল তাহাদের মুক্তি ছিল না; তাহাদের বংশপরম্পরায় পরিবারের প্রত্যেকে ইহা ভোগ করিত। ইহার নানাবিধ উপসর্গের ফলে মানুষ হিংস্র বর্বর পশুতে পরিণত হইত।

বিপক্ষও বা কতদিন ইহা সহ্য করিয়া থাকিবে? দুই দলের মধ্যে স্বভাবতঃই অশান্তির সূচনা ঘটিয়াছিল। পারস্পরিক ঘৃণা, ঈর্ষা, দ্বেষের ফলে দু’পক্ষের কেহ কাহাকেও সহ্য করিতে পারিত না।

ভারতবর্ষে যুদ্ধের করাল রাত্রি অনিবার্যভাবে ঘনাইয়া আসিতেছিল।

সেই শেষ। তাহার পর পৃথিবীর কথা ভুলিতেই বসিয়াছিলাম প্রায়। বহু গ্রহে-উপগ্রহে-নক্ষত্রে ঘুরিলেও তোমাদের সৌরজগতের সন্নিকটে আর আসি নাই।

তারপর একদিন তোমাদের বেতারবার্তা পাই। তোমাদের ভাষা নিতান্তই সরল, তাই বুঝিতে অসুবিধা হয় নাই। পৃথিবীর উদ্দেশ্যে আরেকবার পাড়ি দিবার সিদ্ধান্তে উপনীত হইলাম।

আমাদের সভ্যতার উন্নতির পরিমাপ তোমাদের ক্ষুদ্র, অনুন্নত মস্তিষ্কের সাধ্যের বাহিরে। তোমরা যদি চাও, পৃথিবীর দারিদ্র্য, নিরক্ষরতা, জলকষ্ট, পরিবেশদূষণ, যুদ্ধবিগ্রহ ইত্যাদি যাবতীয় সমস্যার সমাধান আমরা করিয়া দিব।

পরিশেষে ভারতীয়দের উদ্দেশ্যে বলি, তোমাদের ব্যাধির কথা জানিতেও আমরা উৎসুক। এত যুগ অতিবাহিত হইয়াছে, ইতিমধ্যে হয়ত তাহা ভারতবর্ষ হইতে সমূলে উৎপাটিত হইয়াছে।

আর যদিও প্রশমিত নাও হইয়া থাকে, রোগ যদি মহামারীর আকারও ধারণ করিয়া থাকে, চিন্তিত হইও না। ব্রাহ্মণত্ব নিরাময়ের ক্ষমতা এখন আমাদের নখদর্পণে।

ছবিটা পেয়েছি নাফিসা সুলতানার থেকে; উনি কোত্থেকে পেয়েছেন জানা নেই

No comments:

Post a Comment

Followers