মূল গল্প: Answer
লেখক: Fredric Brown
অনুবাদ নয়, “ছায়া অবলম্বনে”
-----
উত্তেজনায় চিৎকার করে উঠলেন অদ্রীশ। স্ক্রীনের সামনে বসে থাকা
কোটি কোটি – না না, আরও অনেক অনেক বেশি – দর্শকের মধ্যে সঞ্চারিত হল সেই উত্তেজনা।
এক হাজার বছরের গবেষণার ফল এই যন্ত্র। যাবতীয় পরীক্ষানিরীক্ষা
শেষ। এবার শুধু একটা বোতাম টেপার অপেক্ষা।
আর তাহলেই ব্রহ্মাণ্ডে বাকি যতগুলো গ্রহে প্রাণের স্পন্দন
পাওয়া গেছে, তারা সবাই চলে আসবে এক নেটওয়র্কে। পৃথিবী সমেত মোট বেয়াল্লিশটা গ্রহে
তথ্যের আদানপ্রদানের জন্য আর বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হবে না।
ছায়াপথের পশ্চিমপ্রান্তের সূর্য নামের নেহাৎই ম্রিয়মাণ একটা তারা
থেকে পনেরো কোটি কিলোমিটার দূরের এই নীল-সবুজ গ্রহটাকে তেমন কেউ পাত্তা দিত না
এতদিন। এবার দেবে, কারণ এই সার্ভার স্বাভাবিকভাবেই থাকবে পৃথিবীতেই।
চল্লিশ প্রজন্মের তপস্যা আজ সার্থক। মহাজাগতিক প্রযুক্তিযুদ্ধে
পৃথিবীর শ্রেষ্ঠত্বের শিরোপা এখন প্রশ্নাতীত।
সাফল্যের হাসি সুধীরের মুখেও। শেষ ছোঁয়াটুকু অদ্রীশের হাতে
হলেও এই প্রজেক্টের কর্ণধার তিনিই।
খুব স্বাভাবিকভাবেই অদ্রীশ তাই সুধীরকে অনুরোধ করলেন বোতাম
টিপতে।
স্ক্রীনে অচেনা কিছু চিহ্ন ফুটে ওঠার পর আস্তে আস্তে ব্লেকনিক
তরঙ্গে সারা ব্রহ্মাণ্ডের কম্পিউটারে ফুটে উঠল, “হ্যালো, ওয়র্ল্ড।”
“পিং সাকসেসফুল,” বলে উঠল সার্ভার।
হাততালি দিয়ে উঠল গবেষণাগারের প্রত্যেকে।
“প্রশ্ন করুন, সুধীর।”
“প্রশ্ন? ও, হ্যাঁ। প্রশ্ন,” স্বভাবতঃই বিহ্বল সুধীর। “আসলে
অনেক, অনেক বছর আগে থেকে ভেবে রেখেছি কী প্রশ্ন করব। দেখি, আমরা যে প্রশ্নের উত্তর
দিতে পারিনি, কোটি কোটি কোটি কোটি সুপারকম্পিউটর মিলে তা পারে কিনা।”
“ঈশ্বর বলে কি সত্যিই কিছু আছে?”
ব্রহ্মাণ্ডের প্রত্যেকটা কম্পিউটারে ধ্বনিত হল সুধীরের প্রশ্নের
অনুবাদ।
দশ
সেকেন্ড কেটে গেল। কুড়ি।
তারপর
নানান্ গ্রহের আকাশ ফালাফালা করে দিল রংবেরঙের বিদ্যুৎরেখা। এত জোরে বাজ পড়ল যে পুরু কাঁচের নিশ্ছিদ্র ল্যাবরেটরির ভেতরেও চমকে উঠলেন বৈজ্ঞানিকরা।
আর তারপর
মেঘমন্দ্রস্বরে শোনা গেল, “এবার থেকে থাকবে।”
বুঝে
উঠতে কয়েকমুহূর্ত লাগল সুধীরের। তারপর চিৎকার করে বোতামটা আরেকবার টিপতে গেলেন তিনি।
শেষ চেষ্টা।
এবার সিলিংজুড়ে চমকাল বিদ্যুৎ। তারপর বাজ
পড়ল ল্যাবরেটরিতে। ডেস্ক থেকে ওঠার সুযোগটুকুও পেলেন না সুধীর, অদ্রীশ,
বা ঘরের অন্য কেউ।
প্রযুক্তির
অন্ধকার শ্মশানে ভৌতিক নীল আলো জ্বেলে চলতে থাকল শুধু সার্ভারটা।
“হ্যালো, ওয়র্ল্ড।”
চমৎকার! আপনার অনুবাদ পড়ার নেশা হয়ে যাচ্ছে।
ReplyDeleteasadharan!
ReplyDelete